বুধবার - ২৫শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১১ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৯শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

পাবনার ফরিদপুরে শত শত কারখানায় তৈরী হচ্ছে অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল,হুমকির মুখে মৎস্য সম্পদ 

পাবনার ফরিদপুরে শত শত কারখানায় তৈরী হচ্ছে অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল,হুমকির মুখে মৎস্য সম্পদ

 

পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২৫০টি কারখানায় তৈরী হচ্ছে অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল । স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করলেও কোনভাবেই স্থায়ীভাবে বন্ধ হচ্ছে না এসব অবৈধ চায়না জালের কারখানা । ফলে এসব জালের অবৈধ ব্যবহারে হুমকির মুখে পড়েছে দেশীয় মাছের প্রজাতি ও জলজ জীববৈচিত্র ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ সব এলাকায় তৈরী জাল বিক্রি করা হচ্ছে চলনবিল সহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে।
এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফরিদপুর উপজেলায ২৫০ টির অধীক জাল তৈরির কারখানা রয়েছে। এ সব কারখানা থেকে প্রতিদিন কোটি টাকার জাল চলনবিল সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এর মধ্যে ডেমরা গ্রামেই রয়েছে প্রায় ১৫০ টি কারখানা। রতনপুরে ৫০ টি, আগ পুংগলী গ্রামে ৩০ টি, গোপালনগর গ্রামে ২০ টি বড় কারখানা রয়েছে বলে জানা গেছে ।এছাড়া এসব এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে জাল তৈরির সরঞ্জাম রয়েছে।
“সবাই কে ম্যানেজ করেই” এসব কারখানা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

রতনপুর গ্রামের চায়না দুয়ারী জাল কারখানার মালিক মমিন বলেন, সবকিছু ম্যানেজ করেই কারখানা চালাই। তাই কাউকে পরোয়া করি না ।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে মালিক সমিতির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি ।

বাংলাদেশের মৎস্য সংরক্ষণ ও সুরক্ষা আইন ১৯৫০ অনুযায়ী চায়না দুয়ারী জাল তৈরি,সংরক্ষণ, আমদানি রপ্তানি ,বাজারজাত ও বহন করা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ। কিন্তু বাস্তবে আইন উপেক্ষা করে এসব এলাকায় অবৈধভাবে জাল তৈরী ও বিক্রি করা হচ্ছে।

পাবনা জেলা প্রশাসক মোঃ মফিজুল ইসলাম জানান, নিষিদ্ধ জাল উৎপাদনের কোন সুযোগ নেই। ইউএনও কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অভিযান চালিয়ে এ সব অবৈধ কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে ।

এ বিষয়ে ফরিদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মাহবুব হাসান জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে এসিল্যান্ড মহোদয় বারে বারে অভিযান পরিচালনা করছেন । ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে ।
অভিযানে গেলে কারখানার মালিকরা লুকিয়ে থেকে নারী ও শিশুদের এগিয়ে দেয়। বিভিন্ন পর্যায়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে এটাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।সর্বোপরি ফরিদপুর উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে সদা তৎপর ।

বিশেষজ্ঞ দের মতে, চায়না দুয়ারী জাল কারেন্ট জালের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর । জালের সুক্ষ গীটের কারনে এতে একবার মাছ বা অন্যান্য জলজ প্রাণী আটকা পড়লে বের হওয়া অসম্ভব।
সহজে বেশী মাছ পাওয়ার আশায় জেলের এই জাল ব্যবহার করে থাকে ।যার ফলে দেশীয় মাছের প্রজনন হুমকির মুখে পড়ে।

সচেতন মহলের ধারণা, পরিবেশ ও জলজ জীববৈচিত্র রক্ষায় এখনই এই অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল উৎপাদন বন্ধে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে অচিরেই দেশীয় মাছের প্রজাতি হারিয়ে যেতে পারে ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn