বুধবার - ১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৯শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

পাঁচ শত বাংলাদেশিকে চিহ্নিত করেছে-দেশে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র

পাঁচ শত বাংলাদেশিকে চিহ্নিত করেছে-দেশে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র

 

 

ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর তার সরকার সেখানে অবৈধভাবে অবস্থান করা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ফেরত পাঠাতে শুরু করেছে। দেশটিতে অনেক বাংলাদেশিও অবৈধভাবে আছেন বলে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ। এই অভিযোগে বাংলাদেশের নাগরিকদেরও ফেরত পাঠানো শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।খবর বার্তা সংস্থা বাপসনিউজ ।

কূটনৈতিক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে অবস্থানের অনুমতি ও কাগজপত্র না থাকার কারণে বাংলাদেশের পাঁচ শত নাগরিককে ফেরত পাঠানোর জন্য এরই মধ্যে দেশটির সরকার চিহ্নিত করেছে। সেখানে প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিতে ব্যর্থ হলে তাদের সবাইকে দেশে ফিরতে হতে পারে।

ফেরত আসা ব্যক্তিদের বিষয়ে কী করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে ঢাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দুই দফা বৈঠক করেছে। বুধবারের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে অংশ নেন পুলিশের বিশেষ শাখা, ইমিগ্রেশন ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।

দুটি বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন এমন এক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এরই মধ্যে অবৈধ হয়ে পড়া ব্যক্তিদের ঢাকায় পাঠাতে শুরু করেছে। গড়ে সপ্তাহে সাত জনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, কোনো দেশে অবস্থানের অনুমতি ও প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা না থাকার কারণে অবৈধ হয়ে পড়া নাগরিককে গ্রহণের বিষয়ে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। এটা শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সব দেশের জন্য প্রযোজ্য।

উপদেষ্টা বলেন, অবৈধ হয়ে পড়া নাগরিকদের ফেরত নিতে অসম্মতি জানালে যারা বৈধ উপায়ে বিভিন্ন কাজে বা ভ্রমণে বিদেশে যান, তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এটি হতে দেওয়া যাবে না।

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ হয়ে পড়া অনেক ভারতীয় নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে সরকার হাতকড়া পরিয়ে সামরিক বিমানে ফেরত পাঠিয়েছে। এ বিষয়টির উল্লেখ করে বাংলাদেশের নাগরিকদের কীভাবে ফেরত পাঠানো হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ফেরত পাঠানোর জন্য চিহ্নিত ব্যক্তির বাংলাদেশের বৈধ পাসপোর্ট থাকলে তাকে সরাসরি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে ফেরত আসা ব্যক্তির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এক বা একাধিক নিরাপত্তা কর্মী একই ফ্লাইটে আসছেন, এমনটিও ঘটছে।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, কোনো ব্যক্তির বৈধ পাসপোর্ট না থাকলে তার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মিশনকে সরকারিভাবে জানানো হয়। সে ক্ষেত্রে মিশন প্রথমে যাচাই করে দেখে, ওই ব্যক্তি আসলেই বাংলাদেশের নাগরিক কি না। যাচাইয়ে বাংলাদেশের নাগরিক প্রমাণিত হলে তার জন্য এককালীন ভ্রমণের পারমিট (টিপি-ট্রাভেল পারমিট) দেওয়া হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র সরকার নিজেদের ব্যবস্থাপনায় তাকে পাঠিয়ে দেয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে যাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে, তাদের ঢাকায় বিমানবন্দরে গ্রহণ করে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে সরকার সহযোগিতা করবে। বুধ ও বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্টদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি রাজ্য নিউইয়র্ক, নিউজার্সি ও কানেটিকাটে অবৈধ বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn