বুধবার - ১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২২শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

পরিমণির ছেলেকে নিয়ে তসলিমা নাসরিনের মন্তব্য

ধুমধাম করেই নিজের ছেলের প্রথম জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন ঢাকাই সিনেমার বহুল আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণি। যদিও জন্মদিনের আগেই পরীপুত্র আলোচনায় ছিলেন নিজের নামের কারণেও। ছেলের পুরো নামের শেষে ‘রাজ্য’র পরিবর্তে ‘পদ্ম’ জুড়ে দিয়েছিলেন পরীমণি।
যার ফলে ‘শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য’ হয়ে যান ‘শাহীম মুহাম্মদ পদ্ম’। এরপর এই নায়িকা জানান- পুত্রের আরও একটি নাম রয়েছে, সেটি হচ্ছে ‘পুণ্য’।
পরীমণির ছেলের নাম পরিবর্তনের সেই আলোচনায় এবার যোগ দিলেন ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। ১২ আগস্ট নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এই লেখিকার মন্তব্য, পরীর জায়গায় আমি হলে ‘রাজ্য’ নয়, ছেলের ডাকনাম রাখতাম ‘পরমানন্দ’।
পাঠকদের জন্য তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো- ঠিক এক বছর আগে লিখেছিলাম, স্বামীর নামের সঙ্গে মিলিয়ে বাচ্চার নাম রাখাটা বিশেষ পছন্দ হয়নি। স্বামীরা আজ আছে, কাল নেই। সন্তান তো চিরদিনের। পরী তার নামের সঙ্গে মিলিয়ে সুন্দর একটি বাংলা নাম রাখতে পারতেন। পরীর জায়গায় আমি হলে ‘রাজ্য’ নয়, ডাকনাম রাখতাম ‘পরমানন্দ’। ভালো নাম ‘শাহীম মুহাম্মদ’ নয়, রাখতাম ‘পরমানন্দ প্রাণ’।
আজ শুনি পরীমণি তার নিজের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে ছেলের নাম রেখেছেন বা রাখতে চাইছেন, পদ্ম অথবা পূণ্য। দুটো নামই সুন্দর। ফুলের নাম শুধু মেয়ের নয়, ছেলের নামও হওয়া উচিত। ফুলের অনেক নামই অবশ্য ছেলেদের নাম, যেমন কমল, উৎপল, পঙ্কজ, কুমুদ, অম্বুজ, নলিনী, কামিনী, বকুল, সরোজ, নীরজ, কিংশুক, পলাশ, এরকম অনেক। পূণ্য নামটি আমার বিশেষ পছন্দের।
পরীমণি তার শুভাকাঙ্ক্ষী এবং স্বজন বন্ধুদের নিয়ে খুব ঘটা করে ছেলের জন্মদিনের উৎসব করেছেন। এই উৎসবে ছেলের পিতার উপস্থিতি জরুরি ছিল না। পরীমণি দেখিয়ে দিয়েছেন তার সন্তানকে একাই তিনি লালন-পালনই শুধু নয়, সন্তানের জন্য আনন্দ-উৎসবের বিশাল আয়োজনও করতে পারেন। মেরুদণ্ড দৃঢ় হলে, আত্মবিশ্বাসী হলে স্বামীকে দরকার হয় না। অত্যাচারী স্বামী নিয়ে সারাবিশ্বে কত মেয়েই যে অশান্তির সংসার করছে, তাদের কিন্তু একা বাঁচার সাহস করতে হবে। জীবন একটিই, এই একটি মাত্র জীবনকে নিষ্পেষিত আর নির্যাতিত হতে দেওয়া কোনো বুদ্ধির কাজ নয়।
পরীমণিকে তার সততা, স্বতঃস্ফূর্ততা, সৎসাহসের জন্য আমার অভিনন্দন। এই সময় কিছু কথা জরুরি বলে মনে হচ্ছে বলে বলছি, সন্তান জীবনের সব নয়। সন্তানকে ঘিরে জীবন আবর্তিত হওয়া উচিত নয়। যদিও পিতৃতান্ত্রিক সমাজ চায় মেয়েদের জীবনের কোনো মূল্য না থাকুক, সন্তান পালনই তাদের একমাত্র বা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্ম হোক। পরীমণি যতই সন্তান নিয়ে মেতে থাকেন, পুরুষেরা ততই তাকে বাহবা দেয়। ‘ভালো মা’ উপাধি দেয়। সন্তানের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে হয় না, সন্তানকে ভালো গাইড করলেই সন্তান ভালো মানুষ হয়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn