রবিবার - ২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৯ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২৩শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

পতাকা উক্তোলন দিবস আজ

পতাকা উক্তোলন দিবস আজ

২ মার্চ ১৯৭১
.
১ মার্চের ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার ২ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আহবানে সমগ্র বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পর্যন্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালিত হয়। দোকানের ঝাপ বন্ধ, কারখানার চিমনিতে ওঠেনি ধোঁয়া, স্তব্ধ কলের চাকা, কর্মচারীরা যোগ দেয়নি কাজে, অফিস আদালতে সর্বত্র স্তব্ধতা ছেয়ে রেখেছিল। ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, ন্যাপ, জতীয় শ্রমিক লীগ, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, কৃষকসমিতি সহ বহু সংগঠন দলমত নির্বিশেষে সকলেই হরতাল পালনে অংশ গ্রহণ করেন।
.
সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় ছাত্র জনতার বিশাল সমাবেশ হয়। স্থানাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের পশ্চিম প্রবেশ পথের গাড়ি বারান্দায় ছাঁদে দাঁড়িয়ে ছাত্রনেতৃবৃন্দ সভা পরিচালনা করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রনেতা নূরে আলম সিদ্দিকী। এই দিন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত স্বাধীন পতাকা উক্তোলন করেন। পতাকা পরিকল্পনা ও অঙ্কন করেন শিল্পী শিব নারায়ণ দাশ। আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন আ স ম আব্দুর রব। স্মরণকালের ঐ বৃহত্তম ছাত্র সভাতেই স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য যে কোন ত্যাগ স্বীকার এবং শেষ পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প ঘোষণা করা হয়।
.
বিকেলে পল্টন এবং বায়তুল মোকাররমে জনসমাবেশ হয়। সকল রাজপথেই ছিল জনতার ঢল। আকস্মিকভাবেই রাত ৭টা থেকে জারী করা হয় কারফিউ। বিক্ষোভে ফেটে পড়া নগরবাসির কাছে পরাজিত হয় সামরিক স্বৈরাচারের কারফিউ। শতাধিক বিক্ষুব্ধ মানুষ স্বৈরাচারের বুলেটে লুটিয়ে পড়ে রাজপথে রাতের শরীর ভারী হবার সঙ্গে সঙ্গে নগরীর হাসপাতালগুলোতে বুলেট বিদ্ধ মানুষের ভীর বাড়তে থাকে। ঢাকার সব এলাকাতেই কারফিউ ভঙ্গকারী জনতার উপর চলে গুলি।
.
বঙ্গবন্ধু এক বিবৃতিতে বলেনঃ যারা শক্তি দ্বারা জনগনের মোকাবেলা করতে চান তাদের এ ধরনের বেপরোয়া পথ থেকে বিরত থাকার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। বাঙ্গালীরা আর নির্যাতিত হতে রাজী নয়, তারা তাদের অধিকার অর্জনে দৃঢ় সংকল্প। বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীকার অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যহত থাকবে ।

সংগৃহিত

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn