বৃহস্পতিবার - ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২৩শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

নিজ গ্রামে চলে গেল ভারসাম্যহীন সাখাওয়াত

নিজ গ্রামে চলে গেল ভারসাম্যহীন সাখাওয়াত

 

কালিয়াকৈর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সামনে বিগত ছয় মাস যাবত ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে দেখা যেত।

প্রথম অবস্থায় তাকে দেখে কেউ পাগল মনে করেনি। সে ছিল অনেক গুছালো এবং চুপচাপ স্বভাবের। কেউ কিছু দিলে খেত অন্যথায় কারো কাছে খাবার বা অন্য কোন কিছু চাইতো না। দুর্ঘটনাবসত তার পায়ে আঘাত লেগে কেটে যায় এবং সেখান থেকে শুরু হয় পচন। অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে তার পায়ের পচা গন্ধে আশেপাশে যাওয়া যেত না।

গত ১৭ই নভেম্বর কালিয়াকৈর উপজেলা এর অন্যতম স্বেচ্ছাসেবক সাজিব হোসেন জিকো এর নজরে আসে। তারপর তিনি কালিয়াকৈর পাবলিক গ্রুপ সহ বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করে চিকিৎসার জন্য অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকের সহযোগিতা চায়।
ফেসবুক পোস্ট দেখে জাহাংগির কবির,রবিন,নুর নবি,জুয়েল সহ অনেক স্বেচ্ছাসেবক এগিয়ে আসে সহযোগিতার জন্য।

১৮ ই নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউসার আহম্মেদ সারকে জানালে তিনি জানান উপজেলা অফিসার ক্লাবের অনেক অফিসার তাকে চিকিৎসার জন্য হসপিটালে নিতে চাইলে সে যেতে চাইনি এবং অফিসারদের দেখলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকরা যদি তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তবে তিনি এবং সমাজসেবা অফিসার মিজানুর রহমান তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ই নভেম্বর কালিয়াকৈর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস টিম এবং উপজেলা আম্বুলেন্স ড্রাইভার লিটন এর সহযোগিতায় মির্জাপুর কুমুদিনী হসপিটালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

এরপর থেকে চিকিৎসার ঔষধ বাবদ খরচ সমাজ সেবা অফিস এবং অন্যান্য খরচ হসপিটাল কর্তৃপক্ষ বহন করে করত।

অবস্থার উন্নতি হলে জানা যায় তার নাম সাখাওয়াত, বয়স ৪৫, পিতাঃমঞ্জুরুল হক, গ্রাম ঃ পাগলা জোর , উপজেলাঃ মোহনগঞ্জ, জেলাঃ নেত্রকোনা।

তার ঠিকানা জানার পরে সমাজ সেবা অফিসার মিজানুর রহমান মোহনগঞ্জ সমাজসেবা অফিসারের মাধ্যমে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তার বড় ভাই শেফায়েত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করেন।

৯ ডিসেম্বর তার ভাই সেফায়েত হোসেন নেত্রকোনা থেকে কালিয়াকৈর সমাজসেবা অফিসে এসে যোগাযোগ করে, সেই সাথে তার ভাই (মানসিক ভারসাম্যহীন) সাখাওয়াত এর চিকিৎসা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হসপিটাল এ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানাই।

সমাজসেবা অফিসার মিজানুর রহমান এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউছার আহম্মেদ এ ব্যাপারে পরামর্শ করে সাখাওয়াতকে তার ভাই শেফায়েত হোসেনের সাথে শর্তসাপেক্ষে দিতে রাজি হয়।

১০ই ডিসেম্বর স্বেচ্ছাসেবক সাজিব হোসেন জিকো এবং জাহাংির কবির নানক এর মাধ্যমে সাখাওয়াত কে তার ভাই সেফায়েত হোসেন এর সাথে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হসপিটাল এ পাঠিয়ে দেওয়া হয় পরবর্তী চিকিৎসার জন্য।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn