সোমবার - ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

নাব্যতা হারানো নদীকেঘিরে সংকটে মৎস্য খাত ও কৃষি

নাব্যতা হারানো নদীকেঘিরে সংকটে মৎস্য খাত ও কৃষি

 

সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার খরমা, মনাই, সুমেশ্বরী ও গুলাই নদী দীর্ঘদিন ধরে পানি সংকটে ভুগছে। নদীগুলোর নাব্যতা হারিয়ে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে একাধিক সমস্যা—ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন, হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য ও নদীকেন্দ্রিক অর্থনীতি।

নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় তীব্র সেচসংকট তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকরা ফসল উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছেন, অনেক জমিই অনাবাদী পড়ে রয়েছে। নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় মাছের প্রজননও কমে গেছে, যার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় জেলেদের জীবিকায়। অনেকে বাধ্য হয়ে অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন।

স্থানীয়রা জানান, নৌযান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে, যা যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনে সমস্যা সৃষ্টি করছে। শুকনো নদীর তলদেশে গড়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা ও চাষাবাদ, যা ভবিষ্যতে নদী পুনরুদ্ধারে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। একই সঙ্গে নদীতে বর্জ্য ফেলার কারণে বাড়ছে দূষণ।

এ প্রসঙ্গে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, “নদীগুলো যেহেতু জনস্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাই ইউনিয়ন পর্যায় থেকে সমস্যা তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন আমাদের কাছে পাঠালে, আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে নদী খননের জন্য অনুরোধ জানাবো।” তিনি আরও বলেন, “যথাযথভাবে নদী খনন সম্ভব হলে বাঁধ নির্মাণে কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।”

ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনি রায় বলেন, “এই অঞ্চলের নদীগুলো পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। অনেক মাছ ইতোমধ্যে বিলুপ্তির পথে।”

স্থানীয় সচেতন মহল দাবি তুলেছে—নদী খনন ও ড্রেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে এবং পরিবেশবান্ধব নদী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

নদী পুনরুজ্জীবনের কার্যকর উদ্যোগ না নিলে সুনামগঞ্জের পরিবেশ, অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থা আরও গভীর সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn