মঙ্গলবার - ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২২শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে বাঁকা ব্রীজ। দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের গতানুগতিক আশ্বাস

নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে বাঁকা ব্রীজ। দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের গতানুগতিক আশ্বাস

 

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার জগৎবিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার পিসি রায়ের জন্মস্থান রাড়ুলী ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ জনপদ বাঁকা বাজার সংলগ্ন বাঁকা ব্রীজটি চরম ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। যে কোন মুর্হুতে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার চরম ঝুঁকিতে রয়েছে ব্রীজটি। যথাযথ দায়িত্বশীল দপ্তরকে বার বার অবহিত করলেও টনক নড়ছে না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সামনে অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার পুরা দায়িত্বভার কাঁধে নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
১৯৯২ সালে খেয়ানৌকা উঠিয়ে বাঁকা ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়। সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার কুল্যা মোড় হয়ে দরগাপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে বাঁকা ব্রীজ। অপরদিকে পাইকগাছা – কয়রার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বিভিন্ন রুট হয়ে বাঁকা ব্রীজ পার হয়ে মানুষ তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে সাতক্ষীরা জেলায় প্রবেশ করে। সঙ্গত কারণেই বাঁকা ব্রীজটি আশাশুনি ও পাইকগাছা উপজেলার মানুষের জন্য যাতায়াতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দূয়ার হিসেবে কাজ করে।
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ্য নদীতে জলবদ্ধতার নিরাসনে ২০২০ সালে কয়রার আমাদী হইতে তালা উপজেলার শালিখা পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার নদীখনন প্রকল্প শুরু হয়। ঐ প্রকল্পের আওতায় বাঁকায় ওখানে একটি বড় ব্রীজ প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল। কপোতাক্ষ্য নদী খনন প্রকল্প ২০২৪ সালে দরগাপুর ও বাঁকার মধ্যবর্তী নদীটুকু নতুন ব্রীজ না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয়দের দাবীর মুখে বন্ধ রেখে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
আমাদী হতে শালিখা পর্যন্ত নদী খনন অবমুক্ত হলে বাঁকা ব্রীজে পানি প্রবাহে বিপত্তি সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা বাঁকা ব্রীজের মাঝ বরাবর একটি সরু ক্যানেল তৈরি করে পানি প্রবাহ বহমান রাখে। প্রবল স্রোতের কারনে পর্যায়ক্রমে ক্যানেলটি ভাঙতে ভাঙতে বাঁকা ব্রীজের দুই পাশের দোকানপাট ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হতে থাকে।
কপোতাক্ষ্য নদী খরস্রোতা রুপ নিয়ে বর্তমানে বাঁকা ব্রীজের দুই প্রান্তের মাটিতে ধ্বস নেমে চরম ঝুঁকি বিরাজ করছে।
স্থানীয় জনতা ব্রীজের দুই প্রান্তে বড় গাছের লক পুঁতে দিয়ে এবং পাইকগাছা উপজেলা প্রশাসন ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
জন দুর্ভোগের বিষয়ে নিয়ে সংশ্লিষ্ট যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনস্ত কেশবপুর উপজেলা অফিসে আমাদের একুশে নিউজের নিজস্ব প্রতিনিধি বাঁকা ব্রীজের সংস্কার বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে ২/৩ দিনের মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন।
স্থানীয় জনতা ওখানে নতুন ব্রীজ নির্মান করে পানিপ্রবাহ অবমুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করেন। কিন্তু আজও পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তর কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
এদিকে বাঁকা ব্রীজটি ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভারি যানবাহন চলাচল না করার কারনে স্বাভাবিক জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে।
বাঁকা ঝুকিপূর্ণ ব্রীজটির বিষয় নিয়ে কথা হয় যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমারের সাথে। তিনি আমাদের একুশে নিউজের অনুসন্ধানী প্রতিবেদক ডাঃ মোঃ জসীম সরদারকে বলেন ব্রীজের দুই প্রান্তে মাটির ধ্বস নামা প্রতিরোধে আমরা জিও ব্যাগের ব্যবস্থা করছি। আমরা ব্রীজটি সরজমিনে পরিদর্শন করেছি। ব্রীজটি দুই প্রান্তের মাটি ধ্বস নেমে জনগণের যাতায়াতের কোন রকম ভোগান্তি না হয় তার জন্য তড়িৎ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্থানীয় জনতার সাথে ব্রীজ নিয়ে কথা বললে তারা কটাক্ষের সুরে বলেন একটি বড় মাপের দূর্ঘটনা না ঘটা পর্যন্ত এই ব্রীজের দিকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নজর দিবে না। জনগণের যাতায়াতের চরম ভোগান্তি লাঘবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা তড়িৎ দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিবেন এমনটি জোরালো দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn