বাংলাদেশে গুমের সংস্কৃতি শুরু হয় জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। ১৯৭৭ সালে বিচারের নামে প্রহসনের হত্যার শিকার সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবার ও স্বজনরা ক্ষোভ জানিয়ে তার মরণোত্তর বিচার দাবি করেছেন।
গতকাল ৩০ আগস্ট বুধবার আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান তারা।
এ সময় বক্তারা বলেন, জিয়াউর রহমানের দেখানো পথে হাঁটছে বিএনপিও। বিলকিস চৌধুরী নামের এক নারী সাড়ে ৪ দশক পরও বাবা হত্যার বিচারের দাবিতে হাজির হয়েছেন শাহবাগে। তার হাতে যুবক বয়সি বাবার ছবি। ১৯৭৭ সালে বিলকিসের বয়স ছিল মাত্র ৪ বছর। বিমানবাহিনীর সার্জেন্ট আবুল বাসার খানের ঝাঁপসা স্মৃতি এখনো তার মনে আছে। সেই সময়ের একটি ঘটনার কথা তুলে ধরেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
তারা বলেন, ১৯৭৭-এর অক্টোবর। জাপানি বিমান ছিনতাই করে ঢাকায় নিয়ে আসে দেশটির রেড আর্মির কমিউনিস্টরা। সেই ঘটনার কারণ আজও অজানা। যদিও সেটিকে হাতিয়ার বানিয়ে বিদ্রোহ দমনের নামে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীতে বিচারের নাটক সাজিয়ে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। একদিনে সামরিক আদালতে বিচার করে সেই রাতেই ফাঁসি দিয়ে গুম করা হয় তিন বাহিনীর অন্তত ১২শ মানুষকে।
শাহবাগে জড়ো হওয়া স্বজনরা বলেন, বাবাকে তো হারিয়েছি কিন্তু বাবার কবর কোথায় সেটিও জানাননি জিয়াউর রহমান। শুধু কী তাই? হত্যার পর কোনোরকম ধর্মীয় রীতিনীতি না মেনেই মাটি চাপা দেওয়া হয় লাশগুলোকে। তাই জিয়ার মরণোত্তর বিচার দাবি করেন তারা।
মানবন্ধনে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতা তারানা হালিম বলেন, জিয়াউর রহমানের দেখানো পথে এখনো হাঁটছে তার দল। যে কারণে এ দেশে ২১ আগস্টের মতো অমানবিক কাণ্ডও ঘটে। মানববন্ধনে অংশ নেন সুপ্রিমকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
বক্তারা আরও বলেন, সামরিক সেই ষড়যন্ত্রের পর কোনো সরকারই দাঁড়ায়নি ভুক্তভোগীদের পাশে। সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন পাওয়ার যে সুযোগ থাকে, সেটি থেকেও বঞ্চিত হয় সব পরিবার।