মঙ্গলবার - ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১২ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

দেশের বাহিরে থেকেও মামলার আসামি,চট্টগ্রামে বিএনপি

গত ১৪ জুন বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ চলাকালীন সময়ে নগরীর জামালখানে সড়কের দু’ধারে অবস্থিত  বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায়  পুলিশ বিএনপি নেতা কর্মীরাদের নামে মামলা করেন। দেশের বাহিরে থেকেও এ মামলার আসামি হয়েছে বলে বিএনপির দাবি। বিএনপি বলেন, চকবাজার ও কোতোয়ালী থানায় করা মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা, সাজানো ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ২০২৪ সালে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ও প্রশাসন এসব গায়েবি মামলা করছে।

অনৈতিকভাবে এসব মামলা করে বিএনপির নেতা কর্মীদের ঘরছাড়া, মাঠছাড়া করতে চায় সরকার। চকবাজার থানার মামলার ৪৫ নম্বর আসামি নগর বিএনপির সাবেক সদস্য মো. ইউসুফ ঘটনার দিন (১৪ জুন) দেশেই ছিলেন না।

ভারত থেকে চোখের অপারেশন করে চিকিৎসা শেষে ১৫ জুন দেশে আসেন।

শনিবার (১৭ জুন) দুপুরে নগরের কাজীর দেউড়ির নসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।

নগরের জামালখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আলোকচিত্র ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়িত নন। এ ঘটনার সঙ্গে যুবলীগ জড়িত বলে দাবি করেছেন ডা. শাহাদাত হোসেন।

তিনি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের কোনোরকম সম্পর্ক নেই বরং এর আগের দিন মহানগর যুবলীগের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নিজেদের দুইগ্রুপের মধ্যে মারামারি করে। এই মারামারি থেকেই বিভিন্ন স্থাপনা ভাংচুর করা হয়। মামলায় যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা কেউ যদি ওইদিন জামালখানে ভাংচুরের ঘটনায় জড়িত এমন প্রমাণ থাকে, ভিডিও ফুটেজে থাকে তাহলে আমরা সব দায় স্বীকার করে নেব।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে কোতোয়ালী ও চকবাজার থানায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে গণগ্রেফতার শুরু করেছে। পুলিশী হয়রানি বন্ধ করা না হলে চট্টগ্রামে হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সেদিন রাতে সমাবেশ থেকে নিজ বাসায় ফেরার পথে মিরসরাইয়ে ছাত্রদলের এক নেত্রীকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শারিরীক হেনস্তা করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। শামীম ও জাহাঙ্গীর নামের দুইজন সাবেক ছাত্রদল নেতাকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে শারিরীক নির্যাতন করেছে। আমি আদালতে গিয়ে তাদের দেখে এসেছি। তাদের সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন। যদি মামলার আসামি হয়ও তাহলে মারধরের অধিকার পুলিশকে কে দিয়েছে? আপনি গ্রেফতার করতে পারবেন। গায়ে হাত তোলার অধিকার কেউ আপনাদের দেয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, যুগ্ম আহবায়ক মিয়া ভোলা, আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান ও নগর ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম প্রমুখ।

দেশে না থেকেও মামলার আসামি মো. ইউসুফ বলেন, আমি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ভারতে চিকিৎসা করতে গিয়ে ছিলাম। গত ১৪ জুন আমি চিকিৎসার জন্য চেন্নাই থাকারও পর চকবাজার থানার মামলায় আসামি করা হয়েছে। ১৫ জুন বিকেল সাড়ে ৫টায় আমি চেন্নাই থেকে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামি। আমি হয়রানি থেকে মুক্তি চাই।

ভারতে থেকেও নাশকতার মামলার ও নির্যাতনের বিষয়ে চকবাজার থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের মজুমদার বলেন, চট্টগ্রাম কলেজের শাফায়েত রাজু নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলায় আসামিদের নাম দিয়েছেন। যদি ইউসুফ দেশের বাইরে থেকে থাকে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। নির্যাতনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের থানায় কোন ধরণের আসামিদের মারধর করা হয়না।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn