
দুই যুগ কর্মস্থলের বাইরে থাকা পরিবার কল্যাণ সহকারি বরখাস্ত
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে শামীম আরা নামে এক পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ সহকারিকে(এফডব্লিউএ) চাকুরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শামীম আরা মোরেলগঞ্জ সদরের ১ এর খ ইউনিটে দায়িত্বরত। কর্ম এলাকায় না থেকে বিভিন্ন ব্যাক্তি ও রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে নিয়মিত প্রায় ৪০ হাজার টাকার বেতন সুবিধা ভোগ করতেন শামীম আরা।
সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ৩টি দপ্তরের স্বাধীন তদন্তে এমন অসংগতি ও কর্মকর্তাদের সাথে অসদাচারণের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তাকে চাকুরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরিবার পরিকল্পনা দপ্তর বাগেরহাট জেলার উপপরিচালক মো. সামসুদ্দিন মোল্লা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
শামীম আরাকে বরখাস্তের ওই অফিস আদেশে বলা হয়েছে, দীর্ঘ বছর যাবত কর্মস্থলে স্থায়ীভাবে অবস্থান না করা, কর্মস্থলে স্থায়ী বাসস্থান না থাকা, সাধারণত স্বামী-সন্তানের সাথে ঢাকায় থাকা, মাঝে-মধ্যে নামে মাত্র কর্মস্থলে এসে দায়সারাভাবে চাকুরি করে বেতন-ভাতা উপভোগ করা, সাধারণ জনগনকে সেবা না দেওয়া ও কর্মকর্তাদের আইনসংগত আদেশ অমান্য করার অভিযোগের প্রমান পাওয়া গেছে।
এ ছাড়াও নিয়ন্ত্রণকারি কর্মকর্তার মোবাইলে তার(শামীম আরার) স্বামীর ফোন নম্বর থেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকী দেওয়া, অসদাচরণ, দায়িত্বে অবহেলা, কর্মে ফাঁকি দেওয়া, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি অনৈতিক সুপারিশ করানো, অনৈতিক চাপ প্রয়োগ ও তাদের প্রতি ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ ৩টি স্বাধীন তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়েছে। ফলে তাকে(শামিম আরা) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
শামীম আরা ১৯৯০ সালে পরিবার কল্যান সহকারি বা এফডাবিøউএ পদে যোগদান করলেও প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের আত্মীয় হওয়ায় শুধু কাগজে কলমেই তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে তার কর্ম এলাকা মোরেলগঞ্জ বাজার, কুঠিবাড়ি, সেরেস্তাদারবাড়ি, কুঠিবাড়ি আশ্রয়ন প্রকল্প ও ভাইজোড়া গ্রামের ৭৭৩ জন সক্ষম দম্পতি বছরের পর বছর ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত সকল ধরণের সেবা ও পরামর্শ থেকে বঞ্চিতই রয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে পরিবার কল্যাণ সহকারি শামীম আরা বলেন, অসুস্থতার কারনে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছেন। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কররা হচ্ছে।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হাসান তারেক বলেন, শামীম আরার অতীত কর্মকান্ড ভালো নয়। তাকে বহুবার সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু সে তোয়াক্কা না করে কর্মকর্তাদেরকে শসিয়ে বেড়াচ্ছে। ভয় দেখাচ্ছে। এ অবস্থায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।