
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নারী শ্রমিক হত্যার রহস্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। দুই প্রেমিকের দ্বন্দ্বে প্রেমিক শাকিলের হাতে খুন হন প্রেমিকা রিনা বেগম (৩৭)।
সোমবার ভোরে ভৈরব বাজার কাঠপট্টি এলাকার একটি বাসা থেকে শাকিলকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের পর হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন তিনি। শাকিলের বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই থানা এলাকার লাখাই গ্রামে। তার বাবার নাম জালাল উদ্দিন। তিনি ভৈরবে ভাড়া বাসায় থেকে একটি হোটেলে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন।
গত শনিবার বিকালে ভৈরবের কাঠপট্টি এলাকার একটি বাসায় রিনা বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিন নিহতের মামাতো ভাই দুলালকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শেরপুরের নকলা থানা এলাকার রিনা বেগম ২ ছেলে ও মামাতো ভাই দুলালকে নিয়ে ভৈরবের কাঠপট্টি এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তারা ভৈরবের বিভিন্ন হোটেলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। একই সঙ্গে শাকিল হোটেল বয় হিসেবে কাজ করতে গিয়ে রিনার সঙ্গে তার পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
অন্যদিকে মামাতো ভাই দুলাল একই সঙ্গে বাসায় থেকে রিনার সঙ্গে প্রেম করতেন। তারা দুই প্রেমিক প্রায় দিন রিনার সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে শারীরিক মেলামেশা করতেন। পরে শাকিল জানতে পারেন দুলালের প্রেমের কথা। এ নিয়ে দুলালের সঙ্গে শাকিলের দ্বন্দ্ব হয়। শাকিল চেষ্টা করেও রিনা বেগমকে দুলালের প্রেম থেকে সরাতে পারেননি।
এসব বিষয় নিয়ে গত শনিবার সকালে রিনার সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তার গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে পালিয়ে যায় শাকিল। ঘটনার সময় অপর প্রেমিক মামাতো ভাই ও তার দুই সন্তান বাসায় ছিল না। পরে খবর পেয়ে তারা বাসায় এসে দেখে রিনার লাশ। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তার লাশ বাসা থেকে উদ্ধার করে।
এ সময় পুলিশ দুলালকে আটক করে এবং পরে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। এ বিষয়ে মামলা হলে পুলিশ দুদিন চেষ্টার পর হত্যার ক্লু বের করে সোমবার ভোরে শাকিলকে গ্রেফতার করে।
ভৈরব থানার ওসি মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম জানান, দুই হোটেল শ্রমিকের প্রেমের বলি হয়েছে রিনা বেগম। শাকিল ও দুলাল কেউ কাউকে সহ্য করতে পারত না। দুজনের সঙ্গে রিনা শারীরিক মেলামেশা করত গোপনে। রিনা দুজন প্রেমিককে হাতে রেখে অনৈতিক কাজ করত। শাকিল বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে রিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।