বুধবার - ১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৯শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

তিন বোনের ‘বিয়ে-তালাক’ পরকিয়া ও বিয়ে প্রতারনার খেলায় বগুড়ায় তোলপাড়

তিন বোনের ‘বিয়ে-তালাক’ পরকিয়া ও বিয়ে প্রতারনার খেলায় বগুড়ায় তোলপাড়

 

বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার নশরৎপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের তিন বোনের অনৈতিক কাজে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তিন বোন হলেন যথাক্রমে- এলমা খাতুন (৩০), নিলুফা ইয়াসমিন (২৬) এবং রওফা খাতুন ওরফে নুপুর (২৪) তাদের পিতার নাম মো. রেজাউল করিম ও মাতা আলতাফুন্নেসা।

জানা যায়, বড় বোন এলমা খাতুন বিয়ে করেছেন তিনটি। ১ম স্বামী মোয়াজ্জেমকে ০৪ বছর বয়সী মনিকা নামে এক কন্যা সন্তান রেখে তালাক দিয়েছেন। মনিকা মাত্র ১৩ বছর বয়সে নানা-নানীর বাড়িতে থাকা অবস্থায় এলাকার এক মাদক কারবারীর সাথে পালিয়ে বিয়ে করে। পরবর্তীতে এলমা খাতুন দ্বিতীয় বিয়ে করেন নাসির খানকে। তাকেও তালাক দিয়ে বর্তমানে তৃতীয় বিয়ে করে ফারুক হোসেনের সাথে বসবাস করছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় স্বামীর অভিযোগ, তালাকের আগে তাদের টাকা ও সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে।

এ বিষয়ে মোয়াজ্জেম বলেন, আমাকে তালাক দিয়েছে আমি নিজেই জানি না, বাবা-মার বাসায় বেড়াতে গিয়ে আর আসেনি পড়ে খবর নিয়ে শুনি নাসির খান নামে একজনের সাথে বিবাহ করছে। তারপর থেকে আমার সাথে আর কোন যোগাযোগ নাই।
এ বিষয়ে নাসির খান বলেন, রেজাউল এর তিন মেয়ে চরিত্রহীন, আমাকে ব্লাকমেইল করে বিয়ে করতে বাধ্য করেছিল আবার টাকার লোভে এখন ফারুক নামের একজনের সাথে সংসার করছে। উল্লেখ্য এলমা মানব পাচার মামলায় হাজতবাস করেছে বর্তমান তার মামলা চলমান।

মেজবোন নিলুফা ইয়াসমিন ইতিমধ্যে ২টি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্বামী জাকারিয়া হোসেন ছিলেন প্রবাসী। তাদের জাকিয়া নামে এক কন্যা রয়েছে। জাকিয়া মাত্র ১৪ বছর বয়সে নানা- নানীর বাড়িতে থাকা অবস্থায় পাশের গ্রামের এক ছেলের সাথে পালিয়ে বিয়ে করে। নিলুফা ইয়াসমিন স্বামী বিদেশ থাকার কারণে একাধিক ছেলের সাথে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে। জাকারিয়ার মতে তালাকের আগে তার অনেক টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে নিলুফা দ্বিতীয় বিয়ে করে আবু রায়হানকে। বর্তমানে বাবা-মার সাথে অবস্থান করছে।

এ বিষয়ে জাকারিয়া বলেন আমার জীবন নষ্ট করে দিয়ে মোবাইলে সম্পর্ক করে আরেকজনের সংসার করছে।

তৃতীয় মেয়ে রওফা খাতুন ওরফে নুপুর ১টি বিয়ে করেছেন। তাদের ঘরে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে নিয়ে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন।

অভিযোগ রয়েছে এলমা, নিলুফা ও রওফা ওরফে নুপুর তিন বোনই বাবা-মায়ের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বিভিন্ন ছেলের সাথে মোবাইলে প্রেম করে বিপুল অংকের টাকা পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। রওফা ওরফে নুপুর এর পরকীয়ার বিষয়টি স্বামীর কাছে দুইবার ধরাও পড়ে।

জানা গেছে, রওফা খাতুন তার প্রথম স্বামীকে সম্প্রতি তালাক দিয়েছেন। এর আগে বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বাবা-মায়ের সহযোগিতায় বার বার সে এরকম অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। স্বামীর আদেশ অমান্য করে বাবা-মার বাড়িতে গিয়ে বাবা-মার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গভীর রাতে বাড়িতে পরপুরুষ নিয়ে রাত কাটায়। স্বামী এসব জেনে যাওয়ার কারণে জোরপূর্বক স্বামীকে তালাক দিয়ে দুই সন্তানকে আটকে রেখেছে। জানা গেছে, খায়ের নামে বিবাহিত এক ছেলের সাথে প্রেমের অভিনয় করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। একই কায়দায় মিনহাজ নামের এক ছেলের নিকট থেকে হাতিয়ে নিয়েছে দুই লক্ষাধিক টাকা। মিনহাজ ইতিপূর্বে দুটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী হত্যার দায়ে জেল খেটেছেন এবং রওফা ওরফে নুপুরকে বিয়ে করার জন্য দ্বিতীয় স্ত্রীকে দুই সন্তানসহ তালাক দিয়েছেন। রওফা খাতুন ওরফে নুপুর ও তার স্বামীকে তালাক দিয়েছে।

জানা গেছে এদিকে তালাক দেওয়ার আগে রওফা গত ২৫-১২-২০২৪ ইং ঢাকা থেকে বগুড়ায় প্রথম স্বামীর বড়বোন এর বাসায় বেড়াতে গিয়ে সেখানে তিনদিন অবস্থান করে এবং তার বাবা-মার বাসায় বেড়াতে যাবার সময় শাশুড়ীর প্রায় সাতভরি স্বর্নালংকার চুরি করে নিয়ে যায়। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৮ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা।
উল্লেখিত বিষয়ে প্রথম স্বামীর বড়বোন গত ১৪-০১-২০২৫ ইং স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন যা তদন্তাধীন।

এ বিষয়ে প্রতিবেশীরা বলেন, রেজাউল আর আলতাফুনেছা অতিরিক্ত লোভী মানুষ। তাদের জন্য কোন মেয়ের এক স্বামীর সাথে সংসার হয়নি।

এ বিষয়ে প্রথম স্বামী, বলেন আমাকে ১১-০১-২০২৫ ইং তারিখে ডির্ভোস দিয়েছে আমি কিছুই জানি না ঐদিন রাতেও আমি ওদের বাসায় ওর সাথেই রাতে ঘুমিয়েছি ১২-০১-২০২৫ দুপুর পর্যন্ত একসাথে থেকে ঢাকায় চলে আসি ১৪-০১-২০২৫ ইং চিঠির মাধ্যমে জানতে পারি ১১-০১-২০২৫ ইং আমাকে ডির্ভোস দিয়েছে এবিষয়ে রওফা ওরফে নুপুর কে জিজ্ঞেস করলে বলে হুম দিয়েছি তুমি আমার বাবা-মাকে সন্মান কর না তারজন্য। এরপর তাদের সাথে আমার আর কোন যোগাযোগ হয়নি। ফোন দিলে রিসিভ করেনা আমার মেয়েদের সাথে কথা বলতে দেয়না।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য বলেন, এদের বিষয়ে অনেক বিচার করা হয়েছে, এরা খুব খারাপ এবং লোভী।

এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান বলেন, আমি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

জানা গেছে, রেজাউল-আলতাফুন্নেসা দম্পতির মেয়েদের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে ইতিপূর্বে সমাজপতিরা তাদরকে একঘরে করেছিলেন।

সচেতন মহলের মতে, এলাকার যুব সমাজ তিন বোনের কারণে তাদের নৈতিক ও চারিত্রিক অবক্ষয়ে মুখে। স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দৃষ্টি দেওয়া একান্ত জরুরি নতুবা তাদের দেখাদেখি উল্লেখিত এলাকার সামাজিক পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn