সোমবার - ২৪শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১০ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২৪শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

তালায় ইরি বোরো চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

তালায় ইরি বোরো চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে দিগন্ত জুড়ে এখন সবুজের সমারোহ। যেদিকে চোখ যায়, শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজ ধানে দখিনা বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জমির ফসল নষ্ট না হলে বাম্পার ফলনের আশায় এবার বুক বেঁধেছে কৃষকরা। বিগত বছরের চেয়ে এ বছর অধিক জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর চাষাবাদের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম থাকার কারণে উপজেলার সকল এলাকায় ব্যাপকহারে ইরি বোরো চাষাবাদ হয়েছে। অনেক নিচু এলাকার জমিতে কৃষক সেচের মাধ্যমে চাষাবাদ করেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারনে রোগবালাই অনেকাংশে কম হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ইরিবোরো চাষে দিগন্ত জুড়ে সবুজ ফসলের সমারোহ। উপজেলার শতকরা ৮০জন সরাসরি কৃষিকাজের সাথে জড়িত। কৃষিকাজ করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ১৯ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হলেও ধানের মুল্য বেশি হওয়াতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫০০ হেক্টরের বেশি জমিতে ইরিবোরো চাষাবাদ হয়েছে। কপোতাক্ষ নদ খননে জলাবদ্ধতা না থাকায় এ বছর উপজেলার ধানদিয়া, নগরঘাটা, সরুলিয়া, কুমিরা, খলিষখালী, তেঁতুলিয়া তালা, জালালপুর, মাগুরা, খলিলনগর, সরুলিয়া, খেশরাসহ সর্বত্রই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে।
তালা উপজেলার ধানাদিয়া গ্রামের ধানচাষী হামিজউদ্দীন গাজী জানান, আবহাওয়া ও প্রকৃতির কারণে এবছর এই ব্লকে গতবারের চাইতে বর্তমানে ধান ভাল বোঝা যাচ্ছে। এ বছর আমার ব্লকে ব্রি-ধান-২৮ বেশ ফলেছে। বর্তমানে আবহাওয়া ভাল, ধান ঘরে না উঠা পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছেনা।
পাটকেলঘাটা গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, এ বছর আমাদের এলাকায় ধানের ফলন খুব ভাল দেখা যাচ্ছে, যদি এভাবে শেষ নামে আবহাওয়া ভাল থাকে তাহলে বাম্পার ফলন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।

খলিষখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাব্বির হোসেন জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর ধান ভাল ও রোগ বালাই কম আছে।তাছাড়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় কৃষকের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।তবে ধান কেটে ঘরে না তোলা পর্যন্ত কৃষকের চিন্তার শেষ নেই।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কল্যাণ কুমার পাল বলেন,‘ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষক যাতে লাভবান হয় সে জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। যেখানেই সমস্যা দেখা যাচ্ছে সেখানেই দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছি।প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগ না হলে ধানের বাম্পার ফলন আশা করা যায়।

তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা বেগম জানান, এবছর আবহাওয়া ভাল থাকার কারণে অনেক এলাকায় চাষাবাদ হয়েছে। এবছর উপজেলায় ব্রি-ধান ২৮ বেশি পরিমান জমিতে চাষাবাদ হয়েছে, তাছাড়া ব্রি ৮৮, শুভলতা, ৬৭, বিনা-১০হাইব্রিড ধানের চাষ ও কিছু এলাকায় লবণ সহিষ্ণু ধান চাষাবাদ হয়েছে। ‘অধিক ফলনের জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের সচেষ্ট হতে আমরা সব সময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছি। কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করায় এখনো পর্যন্ত রোগবালাই কিছুটা কম আছে। ব্লাস্ট রোগ দমনে আগাম পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে । ফলে তিনি আশা করেন, এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn