শনিবার - ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ১৮ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

জাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা!

প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন কাজী সামিতা আশকা নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থী। গত ১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আশকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের (৪৮তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী।
আশকার সহপাঠীরা জানান, আমবাগান এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম ব্যাচের জুনিয়রদের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন আশকা। তার খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহরিয়ার জামান তুর্য নামে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। আত্মহত্যার বিষয়টি তুর্য মুঠোফোনে আশকার সহপাঠীদের জানায়। তখন তারা ওই বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে আশকাকে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। প্রেমিকের সাথে ঝামেলার কারণে আশকা আত্মহত্যা কর‍তে পারেন বলে জানিয়েছেন তারা।
আশকার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন মুন্না বলেন, ‘আমরা খবর পাই, আশকা সিলিংয়ের সাথে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে আসি। পরে তারা সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়৷ এ সময় হাসপাতালের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
শাহরিয়ার জামান তুর্য বলেন, ‘আমি ও আশকা ভিডিও কলে কথা বলছিলাম। তেমন কোন ঝামেলা না, তবে ছোট বিষয় নিয়ে আজকে ঝগড়া হয়। সেটা নিয়ে আশকা আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তখন ফোন কেটে যায়। আমি বার বার চেষ্টা করেও তাকে পায়নি। তখন তার রুমমেট ও বন্ধুদের জানাই।’
ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হোসনে আরা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ফোন দিয়ে জানায়, আশকা অসুস্থ। তাই আমি দ্রুত এ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে দিতে বলে। তবে তারা আমাকে আত্মহত্যার বিষয়টি জানায়নি৷ পরে আমি হাসপাতালে গিয়ে তার আত্মহত্যার বিষয়টি জানতে পারি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. রনি হোসাইন বলেন, ‘যতদূর শুনেছি, আশকা প্রায় তার বন্ধুর সাথে ঝগড়া করতো। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, বন্ধুর সাথে ঝগড়ার জেরে আত্মাহত্যা করতে পারে। আমরা তার রুম পরিদর্শনে যাবো। সেখানে গেলে বিস্তারিত জানাতে পারবো।’
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. অর্ণব বলেন, ‘তাকে রাত সাড়ে নয়টায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ইসিজি রিপোর্ট দেখে বুঝেছি, অন্তত আধাঘন্টা পূর্বে তার মৃত্যু হয়েছে। এটা যেহেতু অস্বাভাবিক মৃত্যু, পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর আমরা মৃতদেহ পরিবারকে বুঝিয়ে দিবো।’
সাভার থানার দায়িত্বরত উপ পরিদর্শক আল মামুন কবির বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে শনাক্ত করেছি। প্রেমিকের সাথে ঝগড়ার জেরে সে আত্মহত্যা করতে পারে বলে জেনেছি। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে পরিবারকে মৃতদেহ বুঝিয়ে দিতে পারবো।’

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn