শুক্রবার - ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ৮ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় শোক দিবসে ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন

জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান।
ফুল দেওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি দল এ সময় সশস্ত্র সালাম জানায়, বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর।
এরপর সেখানে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা এবং আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর চৌদ্দ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর নেতৃত্বে জোটের নেতারা, জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধু ভবন এলাকা সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি হাজারো মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ককের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।
১৯৭৫ সালের এই দিনে সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
সেই রাতে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধু ছাড়াও তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, শেখ জামালের স্ত্রী রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ নাসেরকে হত্যা করে।
নিহত হন বঙ্গবন্ধুর বোনের স্বামী আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবী ও শিশুপুত্র সুকান্ত বাবু; বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, নিকট আত্মীয় শহীদ সেরনিয়াবাত ও রিন্টু।
ধানমণ্ডির বাড়িতে পুলিশের বিশেষ শাখার সাব ইন্সপেক্টর সিদ্দিকুর রহমান ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিলকেও গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় সে সময় প্রাণে বেঁচে যান।
বঙ্গবন্ধুকে জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় দাফন করা হলেও পরিবারের অন্য সদস্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বঙ্গবন্ধুকে জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় দাফন করা হলেও পরিবারের অন্য সদস্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ধানমণ্ডি থেকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যান বনানী কবরস্থানে। সকাল সাড়ে ৭টায় সেখানে জাতির পিতার পরিবার সদস্য ও অন্যদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার পাশপাশি ফুল ছিটিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি।
সেখানে প্রধানমন্ত্রী শহীদদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ করেন ও বিশেষ দোয়ায় অংশ নেন।
জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়াতেও যাবেন প্রধানমন্ত্রী। বেলা ১১টায় জাতির পিতার সমাধিতে তিনি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবেন।
জাতীয় শোকের এই দিনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে, পালিত হচ্ছে নানা কর্মসূচি। দেশের মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা হবে।
দুপুরে সারাদেশে অসচ্ছল, এতিম ও দুস্থ মানুষদের মাঝে খাদ্য বিতরণ ও গণভোজের আয়োজন করবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বাদ আসর ধানমন্ডি বত্রিশে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে মহিলা আওয়ামী লীগ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করবে।
পরদিন ১৬ অগাস্ট বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবসের স্মরণসভার সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn