রবিবার - ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৯শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

জয়পুরহাট পাঁচবিবিতে খেজুর রস থেকে গুড় তৈরী,ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা 

জয়পুরহাট পাঁচবিবিতে খেজুর রস থেকে গুড় তৈরী,ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা

 

শীত যত বাড়ছে, খেজুরের গুড়ের চাহিদাও বাড়ছে। তাই জয়পুরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় খেজুর রস সংগ্রহ ও রস থেকে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।
আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য শীত মৌসুমে গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে খেজুর রস ও গুড় দিয়ে তৈরি হয় নানান রকমের বাহারি পিঠাপুলি ও পায়েস। তাই বানিজ্যিক ভাবেও খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।
গাছিরা জানায়, প্রতিদিন বিকেলে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় মাটির হাড়ি বেঁধে রাখা হয়। পরদিন ভোরে এ সব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে টিনের বড় পাত্রে জ্বাল দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করা হয়।
জানা গেছে, ভারত সীমান্তবর্তী জয়পুরহাট জেলার সদর, পাঁচবিবি ও আক্কেলপুর উপজেলায় খেজুর গাছের সংখ্য বেশি। রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে আসা গাছিরা মৌসুমের শুরুতেই মালিকদের কাছ থেকে খেজুর গাছ চুক্তিতে নিয়ে নেয়।
এসব খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ ও গুড় তৈরি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা

দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতের আগমনে গাছিরা গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধুবৃক্ষ হিসাবে পরিচিত খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের পর গুড় তৈরী শুরু করছে। খেজুর গুড় তৈরীর পাশাপাশি শীতকে ঘিরে গ্রামাঞ্চলে অনেকেই খেজুর রসে তৈরী করে শীতের পিঠাপুলি, পায়েস সহ নানান মজাদার সুস্বাদের খাবার। গাছিরা ভোর রাত থেকে গাছে লাগানো হাঁড়িতে জমা রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। খেজুর গুড়ের অনেক উপকার থাকলে অপকারও আছে বেশ।

পাঁচবিবির সীমান্ত ঘেঁষা রাস্তায় জমির আইল জঙ্গল ও পরিতক্ত জায়গায় সারি সারি খেজুর গাছ অ-যন্ত অবহেলায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এসব গাছের তেমন যন্ত কেউ না করলেও শীত এলেই বাড়ে এর কদর। গাছিরা খেজুর গাছগুলো পরিস্কার করে রস সংগ্রহের নিমিত্তে হাঁড়ি ঝুলিয়ে রাখে। উপজেলা উচনা গ্রামের আব্দুর রউফ বলেন, আমাদের ৩’ভাইয়ের বেশ কয়টা গাছ আছে। আমরা ত রস সংগ্রহ করতে পারিনা সেজন্য গাছিদের দিয়ে দেয়।

তিনি আরো বলেন, গাছগুলোও পরিস্কার এবং বাড়িতে খাওয়ার জন্য একটু গুড় দেয়। দরগাপাড়ার আলম বলেন, আমাদের চোখের সামনে গাছ থেকে রস নামিয়ে গুড় তৈরী করে। কোন প্রকার ভেজাল দেয় না প্রতিবছর বাড়ির খাওয়ার জন্য গুড় এখান থেকেই ক্রয় করি। রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে আসা গাছি আব্দুল মালেক বলেন, আমি ও ছোট ভাই প্রতিবছর প্রায় ২’শ গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরী করি। জালানীর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় আগের ন্যায় লাভ না হলেও পূর্ব পুরুষদের পেশা চালিয়ে যাচ্ছি। গাছের মালিকদের গাছ প্রতি ৩-৪ কেজি গুড়ের বিনিময়ে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি। তিনি আরো বলেন, প্রায় ৪০’বছর যাবৎ ভারত সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রস সংগ্রহ করে তা থেকে গুড় তৈরীর কাজ করে আসছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তরুণ কুমার বলেন, খেজুরের রসের অনেক উপকার আছে। বাদুর সহ নানান পাখি গাছে বসে রস খায় এবং প্রসাব করে থাকে এজন্য আগুনে গরম করে অবশ্যই খেতে হবে বলেও জানান তিনি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn