সোমবার - ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ২৭শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১১ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

চন্দনাইশ শুক্লাম্বর দীঘির মেলায় পুণ্যার্থীদের ঢল

চন্দনাইশ প্রতিনিধি (মোঃ আছহাব উদ্দিন হিরো)
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী বরমা বাইনজুরী গ্রামে হিন্দু স¤প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী শুক্লাম্বর দিঘীর মেলা গতকাল ১৫ জানুয়ারি সোমবার শুরু হয়েছে। মেলা সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য চন্দনাইশ থানা প্রশাসন ও মেলা উদযাপন পরিষদ ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন বলে জানা যায়। দীর্ঘ দুই শতাধিক বছরের পুরানো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দিঘীর মেলা বরমা শুক্লাম্বর দিঘীর পাড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্থানীয়দের মতে, এ দিঘিতে মানত করে মনোবাসনা পূরণ হয় বলে ধারণা এ সম্প্রদায়ের মানুষের। প্রতিবছর ১ মাঘ এ দিঘিকে কেন্দ্র করে বসে বিশাল মেলা। সে মেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপাল, ভুটান থেকে আসে সনাতনী স¤প্রদায়ের বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষ। মেলার দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুণ্যার্থীদের ঢল নামে। এ বছরও মেলায় দেশিবিদেশি মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের নদীয়া থেকে ধর্ম প্রচারের জন্য আসা শুক্লাম্বর ভট্টাচার্যের ধর্মদেশনা স্থানে দুই শতাধিক বছর পূর্বে শুক্লাম্বর ভট্টাচার্যের নামে এ মেলা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রয়াত নিত্যানন্দ বৈলয়। শুক্লাম্বর দিঘীকে কেন্দ্র করে পৌষ সংক্রান্তিতে এ মেলা দিঘির পাড়ে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মেলা ছাড়াও বছরের প্রতিদিন কেউ না কেউ এ পীঠমন্দিরে তাদের মানত নিয়ে আসতে দেখা যায়। তবে সরকারি ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এর সংখ্যা বেশি থাকে। স্থানীয়দের মতে, শুক্লাম্বর ভট্টাচার্য এ দিঘির পাড়ে বসে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। দীর্ঘদিন ধ্যান মগ্নে থাকার পর দুই শতাধিক বছর পূর্বে তিনি ইহ জগত ত্যাগ করলে, তাকে এ দিঘির পাড়ে সমাহিত করা হয়। তার সমাহিত স্থানে একটি অশ্বথ বৃক্ষ বিশাল জায়গা জুড়ে স্মৃতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। পূজারীরা এ অশ্বথ বৃক্ষের ডালে সুতা বাঁধে মনোবাসনা পূরণের আশায় এবং কবুতর ছেড়ে দেয়। মন্দিরের জন্য মানত করা শত শত ছাগল বলি দেয়। বিভিন্ন পূজনীয় দান মন্দিরে উৎসর্গ করেন মেলায় আসা পুজারীরা। তাছাড়া দিঘিতে মেলার দিনসহ বিভিন্ন সময়ে গাভীর দুধ ঢেলে দেয়, স্নান করে তাদের মনোবাসনা পূরণের জন্য। দিঘীর দক্ষিণ পাড়ে একটি শিবমন্দির রয়েছে। যেখানে হিন্দু স¤প্রদায়ের মহিলারা তাদের সন্তানদের জন্য মানত করে পূজা দেয়, তাদের সে মনোবাসনা পূরণ হয় বলেও তাদের বিশ্বাস। মেলা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম টিটো ও সাধারণ সম্পাদক বরমা ইউ পি সদস্য মধুসূদন দত্ত বলেন এই বছর মেলায় প্রচুর লোকের সমাগম হয়েছে। মেলা সুন্দর এবং সুশৃঙ্খলভাবে শেষ করতে আমরা মেলা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। উক্ত মেলা পরিদর্শন করেন, চন্দনাইশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবায়দুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বলরাম চক্রবর্ত্তী, সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ চৌধুরী জুনু, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক বিষ্ণুযশা চক্রবর্ত্তী, সদস্য সচিব কৃষ্ণ চক্রবর্ত্তী, সাবেক সভাপতি ডাঃ কাজল কান্তি বৈদ্য, পরিমল দেব, ভবশংকর ধর,সাংবাদিক আছহাব উদ্দিন হিরো, সত্যপদ তালুকদার বাবলা, সাংবাদিক সৈকত দাশ ইমন, প্রদীপ কান্তি হোড়, পলাশ দেব প্রমূখ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn