নগরের পাঁচলাইশ এলাকা হতে কোটি টাকা মূল্যের দুষ্প্রাপ্য বন্যহাতির দাঁত ও হরিণের চামড়াসহ মোঃ আব্দুল মালেক (৬৮) নামে এক পাচারকারীকে গ্রফতার করেছে র্যাব-৭।
শুক্রবার (২৬ মে) নগরের পাঁচলাইশের শুলকবহর এলাকার একটি বাড়ীর তৃতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে ।এসময় ১৪ কেজি হাতির দাঁত ও ১ টি হরিণের চামড়া জব্দ করা হয়। যার বর্তমান বাজার মূল আনুমানিক ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।ধৃত আসামী মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানার দীতেশ্বর গ্রামের মৃত হাজী আব্দুল আলীর পুত্র।
র্যাব জানায়, ১৯৭৬ সাল থেকে আসামী তার বাবার সাথে রাঙ্গামাটি জেলার বাগাইছড়ি এলাকায় হাতি দেখভাল করার জন্য আসেন। তার বাবার কয়েকটি হাতি ছিল। ১৯৯৮ সালে তার বাবা মারা গেলে হাতির ব্যবসা দেখভাল করার জন্য তিনি ছয় বছর যাবত রাঙ্গামাটি জেলার বাগাইছড়ি থানার মরিশ্যা এলাকায় ছিল। তিনি একজন লাইসেন্সধারী হাতির পালক। ২০১০ সালের পরে লাইসেন্স প্রভিশন হলে তিনি পুনরায় লাইসেন্স করেন। তবে তিনি স্থায়ীভাবে তখন বাঘাইছড়ি থাকতেন না, ২/৪ দিন থেকে আবার মৌলভীবাজার চলে যেতেন। তার বৈধভাবে মোট ছোট বড় ১২ টি হাতি আছে। তবে, স্থানীয় তথ্যানুযায়ী তার আরো ২৪/২৫টি রেজিষ্ট্রেশনবিহীন হাতি রয়েছে যা দিয়ে তিনি বিয়ে বাড়িতে ভাড়াসহ পাহাড়ি এলাকায় গাছ টানার কাজ করেন। পাহাড়ি এলাকা হতে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন বন্যপ্রানীর চামড়া, হাতির দাত সংগ্রহ করে অবৈধভাবে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজের হেফাজতে সংরক্ষণ করে আসছিলেন।
এদিকে র্যাব-৭ সুত্র জানায়, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে কতিপয় ব্যক্তি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এর শুলকবহর এলাকার একটি বাড়ীর ৩য় তলার একটি রুমে বন্য প্রাণী নিধনকৃত হাতির দাঁত ও হরিণের চামড়া সংগ্রহে রেখে বিক্রয় করার চেষ্টা করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত( ২৬ মে) ওই স্থানে পৌছিলে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ১ জন ব্যক্তি কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠাকালে র্যাব সদস্যরা আসামী মোঃ আব্দুল মালেক (৬৮)কে গ্রেফতার করে।
পরবর্তীতে আসামীর ভাড়াকৃত রুমের খাটের নিচ হতে ১ টি সাদা প্লাষ্টিকের বস্তার ভিতর হতে ৪ টি হাতির দাঁত, ছোট বড় ও মাঝারী আকারের ২০ টি হাতির দাঁতের খন্ডাংশ (মোট ১৪ কেজি) এবং ১ টি হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী র্যাব-৭ এর কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে , সে দীর্ঘদিন যাবৎ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল হতে পারমিট ব্যতিত বন্যপ্রানী (হাতির দাঁত ও হরিণের চামড়া) বিভিন্ন অংশ বিশেষ সংগ্রহ করে পরবর্তীতে তা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করে আসছে।পরে গ্রেফতার আসামীকে পাঁচলাইশ থানায় হস্তান্তর করা হয়।