বুধবার - ১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২২শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামের খাল পুনরুদ্ধারে প্রশাসনের আগ্রহ নেই: সবুজ আন্দোলন

চট্টগ্রামের খাল পুনরুদ্ধারে প্রশাসনের
আগ্রহ নেই: সবুজ আন্দোলন

সারা পৃথিবী জুড়ে পরিচিত সৌন্দর্যের লীলাভূমি চট্টগ্রাম জেলা এখন দখল ও দূষণে জর্জরিত। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামে শতাধিক নদী ও খাল থাকলেও বর্তমানে তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ৩০ টির মতো। এর অন্যতম প্রধান কারণ রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে নদী ও খাল দখল। সাম্প্রতিক সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারা বাংলাদেশে নদী ও খাল পুনরুদ্ধারের ঘোষণা দিলেও চট্টগ্রাম জেলায় কোথায়ও কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। দীর্ঘ ৮০ বছরের মধ্যে এ বছর চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে যা স্মরণ কালের কেউ চাক্ষুষ করেনি। আজ ২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের বদ্দারহাট কাশবন রেস্টুরেন্টে সবুজ আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা শাখার ” চট্টগ্রামের নদী ও খাল পুনরুদ্ধারে করনীয় শীর্ষক আলোচনা সভা ও সবুজ আন্দোলনের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন করা হয়। সবুজ আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ ড. মোঃ সানাউল্লাহ সভাপতিত্বে এবং চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ নুরুল কবিরের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার। উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সবুজ আন্দোলন পরিচালনা পরিষদের অর্থ পরিচালক নিলুফার ইয়াসমিন রুপা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সবুজ আন্দোলন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার উপদেষ্টা অধ্যাপক রেহায়েত করিম বাবুল, জেলা আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল ইসলাম মামুন, সদস্য সচিব স্থপতি শহিদুল ইসলাম।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ঢাকা শহরের পরে পরিবেশ দূষণে চট্টগ্রামের অবস্থান। তবে সব থেকে বেশি ভাবনার বিষয় চট্টগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি। বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ জেলা পানির নিচে তলিয়ে যাবে যার নিদর্শন চট্টগ্রামের এই বন্যা পরিস্থিতি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য অতি দ্রুত সমুদ্রের গভীরতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে পাশাপাশি শহরের মধ্যে যে সকল খাল দখল হয়েছে তা পুনরুদ্ধারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। কিন্তু নদী ও খাল পুনরুদ্ধারে প্রশাসনের উদাসীনতা রয়েছে। অবৈধ দখলকারীরা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাদের দখল বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

উদ্বোধক তার বক্তব্য বলেন, পরিবেশ বিপর্যয়ের এই আন্দোলনে নারী সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে নারী ও শিশুরা।

চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, চট্টগ্রাম শহরের নদী ও খাল পুনরুদ্ধারে খুব দ্রুত জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের কর্মসূচি দেওয়া হবে। সকল পর্যায়ে সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিরা এগিয়ে আসলে আগামী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ চট্টগ্রাম গড়ে তোলা সম্ভব।

এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন সবুজ আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কায়সার ইকবাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রক্সি জাহান, সাদ্দাম হোসেন, সাপ্তাহিক চট্টবানীর নির্বাহী সম্পাদক এস কে জীবন চৌধুরী, দৈনিক সকালের সময়ের স্টাফ রিপোর্টার নজরুল ইসলাম। আলোচনা সভায় আরো অংশগ্রহণ করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা, মহানগর ও ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা। আলোচনা শেষে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা হয়। সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বেশ কয়েকজনকে সেরা সংগঠক পুরস্কার দেওয়া হয়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn