সোমবার - ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ঘুম ভাঙ্গবে কবে ?  বিশ্বনাথের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার 

ঘুম ভাঙ্গবে কবে ?  বিশ্বনাথের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার

(বিশ্বনাথে ৪ কিলোমিটার রাস্তায় ৫ কালভার্টে ফাটল: এলাকাবাসীর আবেদনে সাড়া নেই ইউএনও)

 

গুরুত্বপূর্ণ একটি পাকা সড়কের প্রায় চার কিলোমিটারের মধ্যে ৪টি কালভার্টে ফাটল ধরে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্য আরেকটি পাকা রাস্তায় আরো একটি কালভার্টের ফাটল সহ এপ্রোচ ভেঙে ধেবে গেলেও মেরামতের কোন উদ্যোগ না থাকায় শংকিত চলাচলকারীরা। যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি রয়েছে। ঘটতে পারে প্রাণহানিও। দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের নজরে বিষয়টি অবগত করার পরও কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর আবেদনে ইউএনও’র কোন সাড়া পাননি তাঁরা।

এছাড়া এ দুটি রাস্তারই পাকা পিচঢালা উঠে সৃষ্টি হয়েছে পুকুর সম গর্ত। প্রতিনিয়ত ছোট ছোট দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যানবাহন। মেরামতের উদ্যোগ নিতে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান এলাকাবাসী।

সরজমিনে ঘুরে বিশ্বনাথ উপজেলার ২ নং খাজাঞ্চি ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত রামপাশা আএইচডি রোডের পুরান রাজাগঞ্জ বাজার হতে ভোলাগঞ্জ চারিগ্রাম, প্রীতিগঞ্জ বাজার ভায়া পরগনা বাজার লামাকাজী রোডে এমন চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া রাজাগঞ্জ বাজার তেলিকোনা ভায়া আমেরগাঁও খাজাঞ্চি রোডেও দেখা গেছে একি চিত্র।

ভোলাগঞ্জ, চারিগ্রাম ভায়া পরগনা বাজার লামাকাজী রোডের সৈয়দ মারা নামক স্থানের কালভার্টটি ভারী বাহনের চাপে ফেটে যাওয়ায় এ রোডে বড় বাহনগুলোর চলাচল রয়েছে বন্ধ। এটি পুননির্মাণ করতে এলাকাবাসী গত ১৭ ই মার্চ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন এবং ২৫ মার্চ ইউএনও বরাবর এলাকাবাসী লিখিত আবেদন জানান। আবেদনের বিষয়টি আমলে না নেওয়ায় এলাকাবাসীর অনেকই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। এই রোডে আরেকটি ঝুঁকি পূর্ণ কালভার্ট হচ্ছে চারিগ্রাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের কালভার্টটি। এর প্রায় আধাঁ কিলোমিটার উত্তরে আরেকটি ফাটল ধরা কালভার্টের অবস্থান যেটি বিগত উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়ার আমলে নির্মাণ করা হয়। এটি নির্মাণে ব্যাপক দূর্নীতি করার অভিযোগ উঠে এলাকাবাসী পক্ষ থেকে। উদ্বোধনের পরেই এটির উপরের অংশে ফাটল ধরে গর্তের সৃষ্টি হয়। একি রোডে দূর্লভপুরে গ্রামের সম্মুখে আরেকটি কালভার্ট ফাটল সহ ঝুঁকি পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সড়কটি এলজিইডি বিশ্বনাথের আওতায় বিধায় এগুলো দেখভালে কথা বিশ্বনাথ এলজিইডি অফিস। কিন্তু কি কারণে মেরামত বা পুননির্মাণ করা হচ্ছে না তা কেউ জানেন না।

অপরদিকে রাজাগঞ্জ বাজার- তেলিকোনা ভায়া খাজাঞ্চি রাস্তার তেলিকোনা আমেরগাঁও গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে একটি মারাত্মক ঝুঁকি পূর্ণ কালভার্টের অবস্থান রয়েছে। এই কালভার্টের পিলারগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে ফাটল রয়েছে। রাস্তাটির একাধিক স্থানে পুকুর সম গর্ত হলেও মেরামতের কোন তোড়জোড় নেই।

উভয় রাস্তার কালভার্ট সহ মেরামত জরুরি ভিত্তিতে করার দাবী জানান খাজাঞ্চি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রব রাজু, ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য ফুলমালা বেগম, ২ নং ওয়ার্ডে সংগঠক ও শালিস ব্যক্তিত্ব এস এম রফিক আহমদ সহ অনেকেই।

সংগঠক রফিক আহমদ ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেন, ইউএনও বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষে আবেদন করার পরও কোন ভুমিকা না নেওয়ায় আমরা হতাশ। জরুরি ভিত্তিতে কালভার্টগুলো পুননির্মাণ করা না হলে প্রাণীহানি ঘটতে পারে। এছাড়া বড়সড় যানবাহন চলাচল না করায় অনেকের জরুরি মালামাল আনা-নেওয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

কালভার্ট মেরামত ও রাস্তা পুনঃসংস্কারের বিষয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রজেস চন্দ্র দাশ জানান, এধরণের কোন প্রকল্প তাঁর অফিসের আওতাধীন নয়। এটি এলজিইডি দেখাশোনা করে।

উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আবু সাঈদের সাথে যোগাযোগ করতে তাঁর অফিসে একাধিকবার গিয়ে ও তাঁকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে কল ও হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই এবং কোন উত্তর ও দেন নাই।

বিগত ২৫ মার্চ ইউএনও বরাবরে কালভার্ট মেরামতের আবেদন সম্পর্কে ইউএনও সুনন্দা রায় জানান, আবেদন এলে এলজিইডি অফিসে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা, কতো আবেদনই তো আসে। এখন অফিস বন্ধ। ঈদের ছুটি খোলার পর একবার অফিসে আসবেন, এলে দেখে বিস্তারিত বলতে পারব।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn