
গোপালগঞ্জে বর্তমানে চলছে বাল্যবিবাহের ধুম
বর্তমানে গোপালগঞ্জ জেলা জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় চলছে বাল্যবিবাহ দেওয়ার প্রতিযোগিতা। যদিও বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ আইন ২০১৭ ( ২০১৭ সনের ৬ নং আইন)নামে পরিচিত।বাংলাদেশের আইনে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে রয়েছে বিভিন্ন ব্যবস্থা,এবং নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাল্যবিবাহ সংগঠিত করলে সেটা হবে অপরাধ।
উক্ত অপরাধ প্রমানিত হলে তার জন্য রয়েছে আইনী জোরালো পদহ্মেপ ও শাস্তির বিধান।
যেমন মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এর প্রয়োগ : ১৭। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা অপরাধের হ্মেত্রে, মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯. ( ২০০৯ সালের ৫৯ নং আইন) এর তপসিলভুক্ত হওয়া সাপেক্ষে মোবাইল কোর্ট দন্ড আরোপ করিতে পারিবে।
বাল্যবিবাহ সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতাসহ অন্যান্য ব্যক্তির শাস্তি ৮। পিতা-মাতা, অভিভাবক অথবা অন্য কোন ব্যক্তি, আইনগতভাবে বা আইনবহির্ভূতভাবে কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির উপর কর্তৃত্ব সম্পন্ন হইয়া বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করিবার ক্ষেত্রে কোন কাজ করিলে অথবা করিবার অনুমতি বা নির্দেশ প্রদান করিলে অথবা স্বীয় অবহেলার কারণে বিবাহটি বন্ধ করিতে ব্যর্থ হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর ও অন্যূন ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে অনধিক ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
এত আইন ও নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় চলছে বাল্য বিবাহ।গত ১৭-১১-২০২৪ ইং তারিখে এমন একটি বাল্যবিবাহের তথ্য আসে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা(এনপিএস) ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি গোপালগঞ্জ জেলা কমিটির বরাবর।
নাবালিকা মেয়ে।
মেয়ের নাম – রাইসা বিশ্বাস
সে অষ্ঠম শ্রেনীর ছাত্রী।
মেয়ের বাবার নাম -গৌরাঙ্গ বিশ্বাস
গ্রাম :মাছ কান্দি
পোস্ট :টুঠামান্দ্রা
ইউনিয়ন সাহাপুর
ওয়ার্ল্ড নং ৭
থানা – গোপালগঞ্জ সদর।
জেলা- গোপালগঞ্জ।
বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে -১৭/১১/২৪ইং রাতে।
ছেলের বাড়ি জলিলপাড়।
জানাযায় উক্ত বাল্যবিবাহে মেয়ের বাবা – মা সহ
স্থানীয় ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার – সুজন বিশ্বাস।
মোবাইল -০১৭০৫৫৮৮৪১৫.তিনিও সম্পৃক্ত থাকছে।
এমন তথ্য পাওয়ার পরে তাৎহ্মনিক মানবাধিকার সংস্থার ৮ সদস্যদের একটি টিম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চন্দ্র সরকার এর নেতৃত্বে মিটিং করেন। মিটিং এ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও বন্ধ করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যেহেতু সংস্থাটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সর্বদা সামাজিক কাজে ও অন্যায়ের প্রতিবাদে নির্ধারিত প্রশাসন কে অবিহিত করে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় এ ব্যাপারেও গোপালগঞ্জ সদরের এসিল্যান্ড ( এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট) বাবলী শবনম কে বিষয়টি মুঠোফোনে অবগত করা হয়। তিনি ঘটনা স্থলে সরাসরি গিয়ে সত্যতা যাচাই করে নিশ্চিত হওয়ার জন্য বলেন। এবং সত্যতা প্রমাণিত হলে তাকে সকল তথ্য দেওয়ার জন্য বলেন।
তার নির্দেশনা মোতাবেক উক্ত গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীদের ৮ সদস্যের টিম টি সরাসরি ঘটনা স্থলে মেয়ের বাবার বাড়িতে পৌঁছান এবং ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
সাথে সাথে তাদের টিম সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চন্দ্র সরকার মুঠোফোনে এসিল্যান্ড বাবলী শবনম কে বিস্তারিত জানান।এসিল্যান্ড বাবলী শবনম তাকে/ তাদের কে বলেন যে রাতে মোবাইল কোর্ট করা নিয়ম নেই, আপনি ও আপনারা স্পষ্ট করে আমার পহ্ম থেকে বলেন যে, যদি তারা এই বাল্যবিবাহটি দিয়ে দেন তাহলে অপরাধ সংঘটিত হবে, এবং আমরা পরেরদিন মোবাইল কোর্ট করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
তার নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুযায়ী বিবাহ বাড়িতে উপস্থিত সকলকে বিষয়টি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়।
তারপরেও তারা বাল্যবিবাহটি সম্পন্ন করেন।এই বাল্যবিবাহের ব্যাপারে পরেরদিন উক্ত গণমাধ্যম ও মানবাধিকার টিমটি সরাসরি গোপালগঞ্জ সদর
উপজেলার এসিল্যান্ড বাবলী
শবনম স্যারের অফিসে সরাসরি সাহ্মাৎ করেন এবং বিষয় টি সম্পূর্ণ অবগত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ জানান।
এসিল্যান্ড তাদের কে আশ্বস্ত করে বলেন তিনি অবশ্যই ব্যবস্থা নিবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় পরবর্তীতে তিনি আর কোন পদহ্মেপ নেননি, তার সাথে পুনরায় যোগাযোগ করলে তিনি আবাও একই কথা বলেন, যে ব্যবস্থা নিবেন সকল তথ্য প্রেরন সহ ও উক্ত টিমের টিম লিডারের কন্টাক্ট নাম্বার নাজির সাহেবের কাছে রেখে যেতে বলেন।এভাবে ১০ দিন অতিবাহিত হয়ে যায় কিন্তু তার পহ্ম থেকে কোন পদহ্মেপ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে বাল্যবিবাহ সংঘটিত হওয়া এলাকা থেকে সংস্থাটিকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন প্রকারের নেতীবাচক মন্তব্য করা হয়।
সর্বশেষ প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা টি এবং এলাকার সুশীল সমাজ বিনিতভাবে অনুরোধ জানিয়ে বলেন যে, বিষয় টি আমলে নিয়ে সঠিক তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জোর দাবি জানান ।