রবিবার - ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২৬শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা : নেট দুনিয়ায় তোলপাড়!

কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা : নেট দুনিয়ায় তোলপাড়!

 

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল ২২ ডিসেম্বর রবিবার দুপুরের দিকে চৌদ্দগ্রামের নিজ এলাকা কুলিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এটিএম আক্তারুজ্জামান।
রাতে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নেট দুনিয়ায় তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় উঠছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্তে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম আব্দুল হাই কানু। তিনি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়ন ইউনিয়নের লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা কানু কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। স্থানীয় এমপি মুজিবুল হকের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে তার বিরুদ্ধে আগে একাধিক মামলা হয়েছিল। গতকাল রোববার দুপুরে তাকে একা পেয়ে স্থানীয় জামায়াত শিবিরের ১০ থেকে ১২ ব্যক্তি হেনস্থা করে গলায় জুতার মালা দিয়ে এলাকায় ঘুরানো হয় এবং ভিডিও করে নেট দুনিয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় জামায়াত সমর্থক প্রবাসী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে অহিদ, রাসেল, পলাশসহ ১০ থেকে ১২ ব্যক্তি বীর মুক্তিযোদ্ধা কানুর গলায় জুতার মালা দিয়ে এলাকা এমনকি কুমিল্লায় থাকতে পারবেন না বলে হুমকি দিচ্ছেন। এ সময় তিনি জুতার মালা সরিয়ে এলাকায় আর আসবেন না বলেও জানান। এ সময় তার ভিডিও ধারণ ও ছবি নেওয়া হয়। ওই ব্যক্তিরা বলতে থাকেন ‘এক গ্রাম লোকের সামনে মাফ চাইতে পারবেন কিনা? অন্যরা বলতে থাকেন তিনি কুমিল্লা আউট, এলাকা আউট, ছেড়ে দাও।’
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু সাংবাদিকদের বলেন, হঠাৎ আমাকে একা পেয়ে জোর করে ওরা জুতার মালা গালায় দিয়ে ভিডিও করেন। বিচার কার কাছে চাইব? মামলা দিয়ে আর কী হবে? তারা সবাই জামায়াত শিবিরের রাজনীতি করে। আমি আওয়ামী লীগ করলেও বিগত দিনে তাদের কোনও ক্ষতি করিনি। উল্টো আওয়ামী লীগের এমপির রোষানলে পড়ে ৮ বছর এলাকা ছাড়া ছিলাম।
এ ঘটনা নিয়ে বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এটিএম আক্তারুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর ওই মুক্তিযোদ্ধা মোবাইল ফোনে বিষয়টি আমাকে অবগত করেছিলেন। এ বিষয়ে তিনি অভিযোগ করবেন না বলেও জানান। তবে রাতে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার আবারও তাকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ দেবেন কি না বিষয়টি এখনও নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে রোববার রাতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, এ ঘটনার সাথে স্থানীয় জামায়াতের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। প্রবাসী আবুল হাসেম আমাদের দলের কেউ না। তবে সমর্থক কিংবা অনুসারী হলেও হতে পারে। এ বিষয়ে আরও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। জড়িতরা আমাদের কেউ হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn