শুক্রবার - ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৫ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

কালিহাতীতে পরীমণির আগমন ঠেকাতে ধর্মীয় মহলের প্রতিবাদ : স্থগিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

কালিহাতীতে পরীমণির আগমন ঠেকাতে ধর্মীয় মহলের প্রতিবাদ : স্থগিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

 

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ‘হারল্যান’ নামের একটি কসমেটিকস শোরুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চিত্রনায়িকা পরীমণির আসার কথা ছিল। এ নিয়ে ভক্তরা উচ্ছ্বসিত থাকলেও স্থানীয় ধর্মীয় মহল থেকে তীব্র আপত্তি ওঠে। হেফাজতে ইসলামসহ মুসল্লিদের আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত শোরুম কর্তৃপক্ষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্থগিত করতে বাধ্য হয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টায় কালিহাতীর এলেঙ্গার টিন মার্কেটে ‘অথেনটিক রিটেইল কসমেটিকস শপ হারল্যান’ স্টোরের উদ্বোধনী আয়োজন করা হয়েছিল। প্রায় ১৫ দিন ধরে এই অনুষ্ঠান নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে হেফাজতে ইসলাম ও স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা আপত্তি জানিয়ে নানা কর্মসূচির প্রস্তুতি নেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরীমণির আগমনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বিভিন্ন মসজিদে আলোচনা চলতে থাকে। হেফাজতে ইসলামের নেতারা এবং মুসল্লিরা শোরুম মালিক মীর মাসুদ রানার সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুষ্ঠান বাতিলের দাবি জানান। একপর্যায়ে, পুলিশ ও অন্যান্য পক্ষের পরামর্শে মালিকপক্ষ অনুষ্ঠান স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়।

শোরুমের মালিক মীর মাসুদ রানা বলেন, “আমাদের উদ্বোধনী আয়োজনে পরীমণি থাকবেন, এটাই মূল আপত্তির কারণ ছিল। ধর্মীয় নেতারা আপত্তি তোলেন এবং আন্দোলনের হুমকি দেন। থানা পুলিশও বিষয়টি নিয়ে আমাদের সতর্ক করে। তাই আমরা কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করে অনুষ্ঠাটি স্থগিত করি।”

এদিকে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলা শাখার যুব বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ কালিহাতী উপজেলার সভাপতি মুফতি সুলাইমান হাবিব এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “এলেঙ্গায় হারল্যান শোরুমের উদ্বোধনে এক চিত্রশিল্পীর (পরীমণি) আগমনের বিষয়টি জানার পর ধর্মপ্রাণ মানুষজনের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এরপর স্থানীয় আলেম-ওলামারা শোরুম মালিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তিনি আমাদের অনুরোধ রাখেন। ফলে আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি এবং এ নিয়ে আর কোনো আলোচনা-সমালোচনা না করার আহ্বান জানাই।”

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “ধর্মীয় মহলের চাপের মুখে শোরুম কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান স্থগিত করেছে।”

পরীমণির আগমনের বিরোধিতা এবং অনুষ্ঠান বাতিলের ঘটনা এলেঙ্গার ব্যবসায়িক পরিবেশে বড় প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন অনেকে। শোরুম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা প্রচারণার জন্য যে বিনিয়োগ করেছিল, তার ক্ষতি হয়েছে। তবে ধর্মীয় ও সামাজিক সমঝোতার স্বার্থে তারা আপাতত নতুন পরিকল্পনার অপেক্ষায় রয়েছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn