
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ প্রত্নতত্ত নিদর্শন খননকাজ পরিদর্শনকালে বলেছেন, কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের বিশ্বমুড়া এলাকায় প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন খননকাজ পরিচালনাকালে স্থানীয়দের বসত-ভিটে উচ্ছেদ করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, এখানে ইতিহাস-ঐতিহ্য ধরে রাখতে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে। জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হলে এখানকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। স্থানীয়দের জীবনযাত্রার মান দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটকের পদচারনায় এ এলাকা মুখরিত হবে। কর্ণফুলী উপজেলা বিশ্বের দরবারে একটা নতুন পরিচিতি পাবার পাশাপাশি যাদুঘরটি বাংলাদেশের ইতিহাস আর ঐতিহ্যের স্বাক্ষী হয়ে থাকবে।
সচিব আরও বলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীকে নিশ্চয়তা দিয়ে যাচ্ছি। আপনার কোনো ধরনের অপপ্রচার বা গুজবে কান দেবেন না। বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের জান মালের নিরাপত্তায় হুমকি হয় এমন কোন কাজ করবে না।
গতকাল ১৩ অক্টোবর শুক্রবার দুপুরে কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের বিশ্বমুড়া এলাকায় প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন খননকাজ পরিদর্শনকালে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে সংস্কৃতি সচিব এসব কথা বলেন।
কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুনুর রশিদের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রাজিব কুমার সরকার, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আল নাসীফ, কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রতন কুমার,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড জিনবোধি ভিক্ষু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফারজানা রহমান, জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর চট্টগ্রামের উপপরিচালক ড. আতাউর রহমান, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পরিচালক একেএম সাইফুর রহমান,আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট সংগঠক জেবিএস আনন্দবোধি ভিক্ষু, সমাজ সংস্কারক বোধিপাল বড়ুয়া, ব্যাংকার সবুজ বড়ুয়া প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৫৮ জন ছাত্রছাত্রী অংশ নেন।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহযোগিতায় কর্ণফুলী উপজেলার দেয়াঙ পাহাড়ে আদিকালের একটি স্থাপনা খননকাজ শুরু হয় গত ১৬ সেপ্টেম্বর।
প্রাথমিকভাবে অল্প জায়গায় এর খনন কাজ শুরু করা হলেও এখন বিশাল এলাকাজুড়ে এর বিস্তৃতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যার কারণে প্রথমে দুই মাস খননকাজের সময় নির্ধারণ করা হলেও পুরো খননকাজ শেষ হতে আরও বেশি সময় প্রয়োজন হতে পারে বলে জানান প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক একেএম সাইফুর রহমান।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের ইতিহাসে এই প্রত্নতত্ত্বটির ভূমিকা কি খনন কাজ শেষ হলে বলা যেতে পারে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আদিকালে নির্মিত একটি রাজার বাড়ি।