শনিবার - ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৮শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

কবিতা ও রচনা শৈলী ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে গেছে বলে কাজী নজরুল ইসলাম নোবেল পায়নি

কবিতা ও রচনা শৈলী ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে গেছে বলে
কাজী নজরুল ইসলাম নোবেল পায়নি
চবি নজরুল জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে কবি নূরুল হুদা

কবিতা ও রচনা শৈলী ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে গেছে বলে কাজী নজরুল ইসলাম নোবেল পায়নি এবং ঔপনিবেশিক শক্তি শুধু তাদেরকেই নোবেল পুরস্কার বা স্বীকৃতি দিয়েছে যাদের রচনা তাদের ইচ্ছা ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে মিলেছে। শুধু কাজী নজরুল ইসলাম নন, ইউরোপ-আফ্রিকার অনেক বড় বড় লেখকও আছেন যারা শুধুমাত্র সাম্যবাদ নিয়ে লিখেছেন বলেই সাম্রাজ্যবাদী কর্তৃক কখনো স্বীকৃতি মিলেনি এসব কবিদের। কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক আয়োজিত নজরুল জন্মজয়ন্তী উৎসবে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে এ কথা বলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। বৃহস্পতিবার (১ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় চবির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। পার্থ প্রতিম মহাজন ও শারমিন আখতারের সঞ্চালনায় ও চবি নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে এবং অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা। এছাড়া নৃত্য পরিবেশন করেন ওড়িশি নৃত্যশিল্পী প্রমা অবন্তী ও তার দল। কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, আত্মশক্তি জাগরণের মাধ্যমে নিজের জাতিসত্তাকে তিনি বলিয়ান করার চেষ্টা করেছেন। কাজী নজরুল শুধু কবি হিসেবে নয়, চিন্তক হিসেবেও অনন্য। আমাদের যে রাষ্ট্রসত্তা, গণতান্ত্রিক কিংবা অসাম্প্রদায়িক স্বত্বা- সেটিও কাজী নজরুলের বিভিন্ন রচনায় ফুটে উঠেছে। তিনি আরও বলেন, কাজী নজরুলের যুক্তি দর্শন ও সাম্যবাদ দর্শন অধ্যয়ন করেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্র গঠনে উদ্ভুদ্ধ হয়েছেন। কাজী নজরুল চেতনাকে ধারণ করেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো। জয় বাংলার জয়ধ্বনী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কাজী নজরুলের কাছ থেকেই পেয়েছেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, নজরুলকে পাঠ করলে আমাদের বিদ্রোহ সত্তা জেগে ওঠে। নজরুলের যুদ্ধে যাওয়া, সৈনিক জীবন-এগুলো তাঁর রচনার মধ্যেই আমরা দেখতে পাই। যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে নজরুল বৃটিশ সরকারি চাকরি পেলেও সেটা গ্রহণ করেননি। নজরুল সেটি গ্রহণ করলে হয়তো আমরা একজন প্রশাসক পেতাম, কিন্তু কবি নজরুলকে পেতাম না। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম ধুমকেতু পত্রিকায় একটি কবিতা রচনার জন্য ব্রিটিশ সরকার ১৯২৩ সালে তাকে কারাদ-ে দ-িত করেছিলো, ২০২৩ সালে এ ঘটনার শতবছর পূর্ণ হয়েছে। তাই এ বছর কবি নজরুলকে বিশেষভাবে স্মরণ করতে চাই। তিনি আরও বলেন, এ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে বছরে অন্তত একটি গবেষণা জার্নাল প্রকাশ করা হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn