
ওয়াকফ সংশোধনী বিল প্রত্যাহারের দাবিতে তৃনমূল কংগ্রেসের প্রতিবাদ পথ সভা
কেন্দ্রের ওয়াকাফ সংশোধন আইন প্রত্যাহারের দাবিতে মসজিদ মাদ্রাসা কবরস্থান, ঈদগাহ সম্পত্তি রক্ষার্থে জয়নগর ১ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সামীম আহমেদ ঢালী ও তৃণমূল কংগ্রেস সংখ্যালঘু সেলের সহ-সম্পাদক রহমাতুল্লাহ মোল্লা উদ্দগ্যে সকল শাখা সংগঠন পক্ষ থেকে এবং সমাজ সেবি বাংলার প্রতিবাদী কণ্ঠী স্বপ্না ভাদুড়ি ও জয়নগর বিধান সভার বিধায়ক শিক্ষক বিশ্বনাথ দাসের উপস্থিতে পদ্মহাট হাসপাতাল মোড়ে অনুষ্ঠিত হল প্রতিবাদ পথ সভা ।যখন কোন মুসলমান তার স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি আল্লাহর নামে ধার্মিক, দাতব্য বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে তখন তাকে ওয়াকফ বলা হয় এবং এ জাতীয় সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি বলে।ওয়াকফ বোর্ড বর্তমানে ভারত জুড়ে 9.4 লক্ষ একর বিস্তৃত 8.7 লক্ষ সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করে যার। আনুমানিক মূল্য 1.2 লক্ষ কোটি টাকা। বিশ্বের বৃহত্তম ওয়াকফ হোল্ডিং ভারতে রয়েছে। আরও, সশস্ত্র বাহিনী এবং ভারতীয় রেলওয়ের পরে ওয়াকফ বোর্ড ভারতের বৃহত্তম জমির মালিক।
ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনায় সমস্যা এবং চ্যালেঞ্জ গুলি সমাধানের জন্য ওয়াকফ অ্যাক্ট, 1995 সংশোধন করা হয়। 19 শতকের শেষের দিকে ভারতে ওয়াকফ্ বিলোপের জন্য একটি মামলা করা হয়েছিল । 1913 সালের মুসলিম ওয়াকফ বৈধকরণ আইন ভারতে ওয়াকফে্র প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করেছিল।ওয়াকফ্ অ্যাক্ট, 1954 – ওয়াকফ্ শুধুমাত্র স্বাধীনতা পরবর্তী শক্তিশালী হয়েছে।
1954 সালের ওয়াকফ্ আইনটি ওয়াকফে্র কেন্দ্রীকরণের দিকে একটি পথ প্রদান করে। সেন্ট্রাল ওয়াকফ্ কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া, একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা 1964 সালে ভারত সরকার 1954 সালের এই ওয়াকফ্ আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই কেন্দ্রীয় সংস্থাটি বিভিন্ন রাজ্য ওয়াকফ্ বোর্ডের অধীনে কাজ তত্ত্বাবধান করে যা ওয়াকফের ধারা 9(1) এর বিধানের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আইন, 1954।
ওয়াকফ অ্যাক্টকে 1995 সালে মুসলমানদের জন্য আরও অনুকূল করা হয়েছিল, যা এটিকে একটি ওভাররাইডিং আইনে পরিণত করেছিল। ওয়াকফ অ্যাক্ট, 1995 ভারতেউ ওয়াকফ সম্পত্তির (ধর্মীয় এনডাউমেন্ট) প্রশাসন পরিচালনার জন্য প্রণীত হয়েছিল। এটি ওয়াকফ কাউন্সিল, রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ক্ষমতা এবং কার্যাবলী এবং মুতাওয়াল্লির দায়িত্বগুলির জন্য ওয়াকফ আইন, 1995 সংশোধিত হিসাবে 8 ডিসেম্বর রাজ্যসভায় পেশ করা হয়েছিল, 2023।
ওয়াকফের ক্ষেত্রে সম্পত্তির মালিকানা ওয়াক্ফ্ থেকে আল্লাহর কাছে হস্তান্তরিত হয় এবং আল্লাহর কাছ থেকে সম্পত্তি ফেরত নেওয়া যায় না, তাই একবার কোনো সম্পত্তি ওয়াকফ হয়ে গেলে তা সর্বদা ওয়াকফ্ থাকবে, এটি অপরিবর্তনীয় হয়ে যাবে। একবার কোনো সম্পত্তি ওয়াকফ ঘোষণা করা হলে তা চিরকালই থাকে। ভারতে, ওয়াকফ বোর্ডগুলি শুধুমাত্র বৃহত্তম শহুরে জমির মালিক নয়, তাদের আইনগতভাবে তাদের রক্ষা করার জন্য একটি আইনও রয়েছে।ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে নিবন্ধিত 356, 051টি ওয়াকফ এস্টেট রয়েছে।
ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে নিবন্ধিত 872,328টি স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে।ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে নিবন্ধিত 16, 713টি অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে।ওয়াকফ্ বোর্ডের এখন পর্যন্ত 330000টি ডিজিটালাইজড রেকর্ড রয়েছে।মোকদ্দমা এবং অব্যবস্থাপনা: ওয়াকফ আইন, 1995 এবং এর 2013 সংশোধনী অকার্যকরতার জন্য সমালোচিত হয়েছে।
ব্রিটিশ নিপীড়নের প্রধান লক্ষ্যবস্তু উলামারা ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের পরাজয়ের পর, উলামারা ব্রিটিশদের অত্যাচারের প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন। মৌলভি এবং বিদ্রোহী তাদের চোখে সমার্থক হয়ে ওঠে। বিদ্রোহের সময় শহীদ হওয়া ২০০,০০০ মানুষের মধ্যে ৫১,২০০ জন ছিলেন উলামা। এডওয়ার্ড টিমাস নিজেই স্বীকার করেছেন যে শুধুমাত্র দিল্লিতেই ৫০০ উলামাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। ১৮৬৪ থেকে ১৮৭১ সালের মধ্যে উলামাদের বিরুদ্ধে পাঁচটি বড় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ছিল যা “ওহাবি মামলা” এবং “আম্বালা ষড়যন্ত্র মামলা” নামে পরিচিত। এই সমস্ত মামলায় অভিযুক্তদের হয় মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল
ওয়াকফ আইনের ধারা 40 ব্যাপকভাবে একটি সম্পত্তি অধিগ্রহণ এবং সম্পত্তি হিসাবে ঘোষণা করার জন্য অপব্যবহার করা হয়েছিল। এটি শুধুমাত্র বিপুল সংখ্যক মামলাই নয়, সম্প্রদায়ের মধ্যে বৈষম্যও সৃষ্টি করেছে।
ওয়াকফ্ আইন দেশের শুধুমাত্র একটি ধর্মের ধর্মীয় সম্পত্তির জন্য একটি বিশেষ আইন, যখন অন্য কোনো ধর্মের জন্য এই ধরনের কোনো আইন নেই।প্রস্তাবিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল প্রত্যাহারের বাতিলের দাবিতে জয়নগর এক নম্বর ব্লকের যুব তৃনমূল সভাপতি সামীম আহমেদ ঢালী ও সংখ্যালঘু সেলের সহ-সম্পাদক রহমাতুল্লাহ মোল্লা উদ্দগ্যে
জয়নগর থানার জয়নগর এক নম্বর ব্লকের দক্ষিণ বারাসত অঞ্চলের পদ্মহাট হাসপাতাল মোড়ে প্রতিবাদী কণ্ঠী স্বপ্না ভাদুড়ি মহা সমাবেশে স্তব্ধ গোটা জয়নগর পদ্মহাট হাসপাতাল মোড়।কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়াকফ বিলের কালাকানুন আইন সাংসদ ভবনের ভোটাভুটি পর পেশ হওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রাজ্যসভার এই আই পাশ হয় এবং রাজ্যপাল ঐ বিলে বিনাদ্বিধায় সই করে রাজ্যের পাশ হয়।সভায় বক্তব্য রাখেন সমাজ সেবি ও প্রতিবাদী কণ্ঠী স্বপ্না ভাদুড়ী
স্বপ্না ভাদুড়ি বলেন আজ ঐতিহাসিক দিন যা আমার কাছে জাতির ঐক্য সাধন দিনের সমস্যা উদ্দেশ্যে এক জায়গায় জমায়েত হতে পেরেছি এটা আল্লাহর কাছে লক্ষ লক্ষ কোটি শুকরিয়া তিনি বলেন আমরা ধৈর্য ধারণ করি আমাদের আন্দোলন সারা রাজ্য জুড়ে চলবে। তিনি দাবি করেন আমাদের (মুসলমানদের) বাদ দিয়ে ভারতবর্ষ চলবেনা , চলবেনা,। পশ্চিমবঙ্গের তিন টি খুঁটি, তার মধ্যে মুসলমানরা একটি খুঁটি। আমরা হলাম বাংলার খুঁটি ।এই সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কালা কানুন আইনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন।এই সভা থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন ওয়াকা বিলের এই যে আইন পাস করেছে তা অমানবিক আইন অত্যন্ত অসংঘতি আইন ওরা গায়ের জোরে টাকা জোড়ে ,কেন্দ্রের টাকা বলে এই আইন চালু করেছে।তিনি আরো বলেন আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে যতদিন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার এই কালাআইন প্রত্যাহার না করবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলতে থাকবে এমনকি আমাদের শরীরের এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন থেকে পিছু হটবোনা। ভারতবর্ষের ৮০ শতাংশ হিন্দুরা এই আইন কি পাস করেছে। তিনি বলেন এই আইন প্রত্যাহার হবে প্রত্যাহার হবে। এই আইন কোন দেশের বল বধ হবে না। তিনি শুভেন্দু অধিকারের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে বলেন তোমার যদি ক্ষমতা থাকে একবার জয়নগর কেন্দ্রে এসে দেখো এখানে হিন্দু মুসলিম মিলন দেখে যাও। তিনি আরো বলেন বাংলায় হিন্দু মুসলিম একসঙ্গে আছে এবং আগামী থাকবে চিরজীবন থাকবে কোন মতে বিভাজন করা যাবে না ।এটা রবীন্দ্রনাথের বাংলা ,কবি নজরুলের বাংলা, এটা সম্প্রীতির বাংলা এখানে হিন্দু-মুসলিম কে পৃথক করা যাবে না যাবেনা। বিধায়ক শিক্ষক বিশ্বনাথ দাস সভায় উপস্থিত হয়ে বলে আমাদের দিদি মমতা ব্যানার্জি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন আমার বাংলায় কোন দিন আমি এই কেন্দ্রীয় সরকারের কালা কানুন আইন হতে দেবোনা। তিনি এই সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন এমনকি এই সভা থেকে পদ্মহাট গ্ৰামবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা আমার কাছে দাবি রেখেছেন কলকাতা রাস্তা ধারে ইলেকট্রিক আলোয় আলোকিত হয়ে থাকে আমাদের জয়নগর কেন্দ্রটি যদি ঐরকম আলোয় আলোকিত করেন তাহলে খুব ভালো হয়।আমি সেই কথা মাথায় রেখে সামনে ঈদ উল আযহার পর্যন্ত বাংলার মোড় থেকে জয়নগর থানার মোড় পর্যন্ত মেল রাস্তার ধারে ইলেকট্রিক আলোয় ব্যাবস্থা করে দেব।সভায় উপস্থিত ছিলেন জয়নগর কেন্দ্রে বিধায়ক শিক্ষক বিশ্বনাথ দাস , তুহিন বিশ্বাস, স্বপ্না ভাদুড়ি, জয়নগর এক নম্বর ব্লকের যুব সভাপতি শামীম আহমেদ ঢালী , সংখ্যালঘু সেলের সহ-সম্পাদক রহমাতুল্লাহ মোল্লা, দক্ষিণ বারাসাত অঞ্চলের প্রধান সাহেবা, দক্ষিণ বারাসাত অঞ্চলের উপপ্রধান গিয়াস উদ্দিন বিশিষ্ট সমাজসেবীক হাফেজ আবুল কালাম মন্ডল দক্ষিণ ২৪পরগনার জয় হিন্দ বাহিনীর সহ-সভাপতি রাজু লস্কর দক্ষিণ ২৪পরগনা জেলা পরিষদের সদস্যা বন্দনা লস্কর সহ সমস্ত অঞ্চলের বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ গন।