রবিবার - ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

আশুলিয়ায় শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা মিমাংসার চেষ্টা, গ্রেপ্তার ১

আশুলিয়ায় শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা মিমাংসার চেষ্টা, গ্রেপ্তার ১

 

আশুলিয়ায় মাদ্রাসা পড়ুয়া ৮ বছরের এক শিশুকে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া শিশুটির বাবা-মাকে হুমকি ধমকি দিয়ে মীমাংসার নামে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাও চালানো হয়েছে। এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পেরে রাতেই মিমাংসার চেষ্টাকারী সাইদুর রহমানের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত মুদি দোকানি হাবিবুর রহমান (৪৬) কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে আসামিকে আশুলিয়া থানা থেকে ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে, শুক্রবার রাতে আশুলিয়ার কবিরপুর তেলিবাড়ী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার মো. হাবিবুর রহমান (৪৬) বরিশাল সদর থানার কোকাইনগর ইউনিয়নের ডিঙ্গামানিক এলাকার মৃত আবুল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি বর্তমানে আশুলিয়ার কবিরপুর তেলিবাড়ী বাজার এলাকায় নিজ বাড়িতে বসবাস করে মুদি দোকানের ব্যবসা করে আসছিলেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কবিরপুর তেলিবাড়ী বাজার এলাকার স্থানীয় বাড়িওয়ালা সাইদুর রহমান, কানা জাকিরসহ কয়েকজন মিলে ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা-মাকে হুমকি ধমকি দিয়ে টাকা বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। শিশুটির বাবা-মা স্থানীয় পোশাক কারখানায় কাজ করেন এবং একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান তেলিবাড়ী বাজার এলাকায় মুদি দোকানের ব্যবসা করেন। ৮ বছর বয়সী ওই শিশুকে চকলেট দেওয়ার কথা বলে দোকানের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় শিশুটির ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসতে দেখলে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেন। রাতে শরীরে জ্বর আসলে শিশুটির মা ভেজা কাপড় দিয়ে তার শরীর মুছতে গেলে স্পর্শকাতর স্থানে দাগ দেখতে পায়। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে শিশুটি তার মাকে ঘটনাটি খুলে বলে। পরে শিশুটির বাবা-মা বাড়িওয়ালা সাইদুর রহমানকে ঘটনাটি জানালে সে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমানকে তার বাসায় ডেকে নেয়। সাইদুর রহমান ও কানা জাকিরসহ কয়েকজন মিলে ‘ধর্ষণ চেষ্টার ক্ষতিপূরণ’ হিসেবে ২ লাখ টাকা শিশুটির পরিবারকে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। রাত ৯টার দিকে এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পেরে সাইদুরের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ শুরু করে বাড়িটি ঘিরে রাখে। একপর্যায়ে স্থানীয়রা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে কল করলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ সাইদুরের বাড়িতে গিয়ে অভিযুক্তকে আটক করে। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ ওই বাসা থেকে অভিযুক্তকে থানায় নিয়ে যায়।

শিশুটির বাবা বলেন, আমি এখানে ভাড়া থাকি এবং একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি। স্থানীয় বাড়িওয়ালা সাইদুর ও কানা জাকিরসহ কয়েকজন মিলে আমাকে চাপ দিয়ে বিষয়টি চেপে যেতে বলেন। এ বিষয়ে আমরা কোন মামলা মোকদ্দমা করলে আমাদের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে হুমকি প্রদান করেন। আমার মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিচার চাই।

স্থানীয় বাসিন্দারা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দোষী ব্যক্তির দ্রুত বিচার ও মিমাংসার চেষ্টাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সমাজের সচেতনতা ও আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি বলে মনে করেন সচেতন মহল।

এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন বলেন, আট বছরের শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে হাবিবুর রহমান নামের এক মুদি দোকানিকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn