শনিবার - ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২২শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগ

 

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়া শাখার উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর গুড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদে ২১শে ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধা ৭টায় সিডনির রেডরোজ ফাংশন সেন্টারে আলোচনা ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন।
বিশিষ্ট গবেষক, লেখক ও কলামিষ্ট কাইউম পারভেজের সভাপতিত্বে ও মাকসুদুর রহমান সুমন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা দিকনির্দেশনামুলক বক্তব্য দিয়ে নেতা কর্মীদের উজ্জীবিত করেন।

সিনিয়র সাংবাদিক ফজলুল বারীর বেশ কিছু প্রশ্নের সাবলীল ভাষায় জবাব দেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।সিডনি থেকে বাপসনিউজকে এসংবাদ দিয়েছেন সুমন চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট গবেষক, লেখক ও কলামিষ্ট কাইউম পারভেজ, সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মোল্লা, চট্রগ্রাম সিটি কলেজের সাবেক ভি.পি ও জি.এস ইফতেখার উদ্দিন ইফতু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেলিমা বেগম, ফজলুল হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ফটো সাংবাদিক আবু তারিক, সিপিআই আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান রিতু, স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে চরম পত্র খ্যাত এক কিংবদন্তী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম আর আখতার মুকুলের সুযোগ্য কন্যা কবিতা পারভেজ, অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ড. লাভলী রহমান,সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সাথে ফোনে সংযুক্ত করেছেন অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মুনির হোসাইন, অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আইভি রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অমল দত্ত, অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগ নেতা জিয়াউল কবির জিয়ন, অস্ট্রেলিয়া ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠিাতা সাধারণ সম্পাদক অপু সারোয়ার, অস্ট্রেলিয়া ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মঈদুজ্জামান সুজন, অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগ নেতা পল মধু, পল দুলাল গমেজ, রাশিদুল হক, কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাইফুল ইসলাম তালুকদার, অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগ নেতা মাইনুল ইসলাম জনি, জাহাঙ্গীর আলম জয়, অস্ট্রেলিয়া ছাত্রলীগ নেতা তাসনিম উদ্দিন ফাহিম প্রমুখ।খবর বাপসনিউজ । বাংলাদেশের বর্তমান অরাজক পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ ফেব্রুয়ারি,শুক্রবার সন্ধ্যায় সিডনিতে আওয়ামী লীগের এক সভায় একজন দার্শনিকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, এক হাজার যোগ্য ব্যক্তির মৃত্যুতে যে ক্ষতি হয়, তার চেয়েও বেশী ক্ষতি হয় যখোন কোন অযোগ্য ব্যক্তি ক্ষমতায় আসে। পরিবার থেকে রাষ্ট্র সকল জায়গায় বিষয়টি সমানভাবে প্রযোজ্য। শেখ হাসিনা বলেন, ইউনূসের মত অযোগ্য ব্যক্তি ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা দখলের পরই দেশটা ধ্বংসের কিনারে পৌঁছে গেছে। শেখ হাসিনা বলেন, যে দেশটি সারবিশ্বে মাথা উঁচু করে দাড়িয়েছিল। আপনারা প্রবাসীরাও যেখানেই গিয়েছেন মর্যাদা পেয়েছেন। দেশটি উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছিল, অনেক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান আমাকে বলেছিলেন যে, আপনার ম্যাজিকটি কি? কীভাবে উন্নতি করছেন? জবাবে আমি বলেছি, আমার কাছে কোন ম্যাজিক নেই। আমি দেশের মানুষকে ভালবাসী। আমার বাবাও ভালবাসতেন, আর সেই ভালবাসা তিনি আমাকে শিখিয়েছেন। জাতির পিতা বলেছেন, ‘মানুষকে ভালবাসতে শিখো। দেশের মানুষকে ভালবাসো। এই ভালবাসার মধ্যে যেন কোন খাদ না থাকে।’ আমি আমার বাবার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। নি:স্বার্থভাবে মানুষকে ভালবেসে মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। তাদের দু:খ-দুর্দশা নিজের চোখে দেখেছি। চেষ্টা করেছি গোটা বাংলাদেশে সুষম উন্নয়ন দিতে। তা রাজধানী ভিত্তিক ছিল না, গ্রামভিত্তিক উন্নয়নে কাজ করেছি বলেই বাংলাদেশ উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু আজ সব ধ্বংস করে দিল। একটি মানুষের লোভের আগুনে বাংলাদেশ জ্বলে-পুড়ে ছাড়খার। শেখ হাসিনা বলেন, এই দুর্বৃত্তায়নের হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্যে আপনাদের সহযোগিতা দরকার। তাহলেই আবার বাংলাদেশের উন্নয়নে দায়িত্ব নিতে পারলে ২০৪১ সালের মধ্যেই উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো।

মহান ভাষা দিবস উপলক্ষে সিডনিতে আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী অঙ্গ সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক, ও মুক্তিযোদ্ধের পক্ষে সংগঠনের উদ্যোগে এ সমাবেশে টেলিফোনে প্রদত্ত বক্তব্যে বরাবরের মত তার আমলের উন্নয়ন-অগ্রগতির বিবরণী উপস্থাপনের পর শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের ক্ষতি রোধ কল্পে আমি ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ত্যাগ করেছি। এরপর আমার বিরুদ্ধে আড়াই শত হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গণহত্যার অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। অথচ প্রতিটি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে ড. ইউনূস ক্ষমতা গ্রহণের পর। শেখ হাসিনা বলেন, হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলাসহ বাংলাদেশে যত সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল সবকটির বিচার করেছি। একুশ আগস্টে গ্রেনেড হামলার সাথে জড়িতদেরও বিচার হয়েছে। অপরাধীরা প্রচলিত আইনে দন্ডিত হবার পর শাস্তি ভোগ করছিল। ইউনূস ক্ষমতায় আসার পর সকল সন্ত্রাসী আর জঙ্গিকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবে জেলখানা খালি করার এখন তা ভরছে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলীয় জোটের নেতা-কর্মী দিয়ে। শেখ হাসিনা বলেন, ওরা ৭ জন সাংবাদিককে হত্যা করেছে। শতাধিক সাংবাদিকের বিরুদ্ধেও হত্যা মামলা দিয়েছে। প্রায় তিনশ সাংবাদিকের চাকরি খেয়েছে। অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড কেড়ে নিয়েছে। হত্যা মামলা দেয়া হয়েছে এজন্যে যে, সে সব মামলায় জামিন হয় না।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, আমি যাদের হত্যা করেছি বলে মামলা দিয়েছে, এরমধ্যে ৩৫ জন জীবিত ফিরেছে। আর অনেকের মা-বাবা এখন বলছেন যে, তাদের সন্তানেরা খুন হয়নি, অসুস্থ কিংবা দুর্ঘটনায় মারা গেছে। আবার অনেকে জীবিত ফিরে সভা-সমাবেশে বক্তৃতাও দিচ্ছে। তাহলে এভাবে হত্যা মামলা দেয়ার অর্থটা কি?
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ছিলেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. কাইউম পারভেজের সমাপনী বক্তব্য শেষে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্তি ষোষনা করেন। সভার শুরুতে প্রারম্ভে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে নিহত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান,জাতীয় চারনেতা,৫২এর মহান ভাষা আন্দোলনসহ আজ পর্যন্ত সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দাঁড়িয়ে একমিনিট কাল নীরবতা পালন করা হয় | সভা শেষে সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয় ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn