
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেটের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের বাসায় ন্যক্কারজনক হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের বিবৃতি
গতকাল ২ মার্চ সন্ধ্যায় সিলেটের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের বাসায় ন্যক্কারজনক হামলা ও ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক আজ এক বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে আমি সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের দায়িত্বে আছি। এই দায়িত্বের পাশাপাশি রাজনৈতিক পথ চলার পরিক্রমায় পর্যবেক্ষণ করেছি সিলেটের রাজনৈতিক সংস্কৃতির স্বতন্ত্র একটি ধারা আছে। দল-মত নির্বিশেষে সিলেটের নেতৃবৃন্দের মধ্যে এক ধরনের সম্প্রীতিময় ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান ছিল। বিগত দিনে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকাকালেও বিএনপির আরিফুল হক নির্বিঘ্নে দুই বার সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছে। সিলেটের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এক ধরনের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও শিষ্টাচারের অলিখিত প্রথা প্রচলিত ছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল,সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য রঞ্জিত সরকার, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহেল আহমেদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য শাফায়াত খান, মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের বাসায় নির্বিচারে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা সম্প্রীতির রাজনীতির সেই মর্মমূলে কুঠারঘাত। আমি এই ন্যক্কারজনক হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, আজকের বাংলাদেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সকল ধরনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। রাজনীতির পরিচয়ের বাইরেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখে। অথচ আজকের অবৈধ দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকার শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরই নয়,তাদের পরিবারের সদস্যদের ন্যূনতম নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ও দেশবিরোধী একটি অপশক্তি যখন অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে তখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শের ধারার রাজনীতির একজন কর্মীকে বিরোধী পক্ষে ঠেলে দেওয়া হবে। এটাকে অনেকে স্বাভাবিক ধরে নিলেও তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে রাষ্ট্রহীন করে ফেলার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ সোচ্চার রয়েছে। বর্তমান অবৈধ দখলদার সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটে অংশগ্রহণ করেছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সমগ্র বাংলাদেশ রাজনীতির একটি দুষ্টচক্রে ঢুকে পড়ছে। দেশের জনসমষ্টির বিশাল একটা অংশকে অনিরাপদ রেখে বাকিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারসহ যে সব রাজনৈতিক দল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এসব ঘটনায় রসদ জোগাচ্ছেন। তারা সকলেই সমানভাবে দায়ী। রাজনৈতিক মতাদর্শকে রাজনৈতিক তরিকায় মোকাবিলা করতে ব্যর্থরাই এ ধরনের ধ্বংসাত্মক পন্থা অবলম্বন করছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, গতকাল সিলেটে যে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে তা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এটা ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের প্রেসক্রিপশনে সারা দেশে পরিচালিত সুপরিকল্পিত তাণ্ডব, ধ্বংসযজ্ঞ ও নৈরাজ্যের অংশ এবং এটাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। কেননা গতরাতে যারা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালালো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বা তাদেরকে গ্রেফতার না করে, মিছিলে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের পুলিশ বেআইনিভাবে গ্রেফতার করেছে। দ্বিমুখী নীতিতে প্রশাসনকে পরিচালিত করে সেটাকে দানবীয় রূপ দেওয়ায় আমরা অবৈধ দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।