সোমবার - ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ২৭শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১১ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

অভিযোগের পাহাড় ডিঙিয়ে সওজের প্রকৌশলী সুমন সিংহ বদলি : আশংকা অনিয়ম ও দুর্ণীতির বিচার

অভিযোগের পাহাড় ডিঙিয়ে সওজের প্রকৌশলী সুমন সিংহ বদলি : আশংকা অনিয়ম ও দুর্ণীতির বিচার

 

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) চট্টগ্রাম দক্ষিণের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ। গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কচুয়াই।
সেখানে তিনি ৫ কোটি টাকায় নির্মাণ করেছেন বিলাসবহুল বাড়ি। প্রভাব খাটিয়ে সেই বাড়িতে যেতে সরকারের ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন রাস্তা।
চট্টগ্রাম নগরের অভিজাত এলাকা জামালখানে কিনেছেন আলিশান ফ্ল্যাটও, রয়েছে নগরে নামে বেনামে ফ্ল্যাট – প্লট।
প্রভাব খাটিয়ে চার বছর ধরে নিজের এলাকায় চাকরির পাশাপাশি নিজের দপ্তরে চাকরি দিয়েছেন পরিবারের ৮ জনকে।
সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত আগের দক্ষ কর্মচারীদের বাদ দিয়ে পরিবারের লোকজনকে বসিয়েছেন পছন্দমতো পদে। এরপর তাদের মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারদের নিয়ে কাজ ভাগিয়ে নেন।
পরবর্তীতে ঠিকাদারদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে গ্রহণ করেন কমিশন।
নানা অভিযোগের পাহাড় মাথায় নিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি স্ট্যান্ড রিলিজ হন নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ। সওজের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসানের সই করা প্রজ্ঞাপনে তাকে বান্দরবান সড়ক বিভাগে বদলি করা হয়। একই আদেশে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে সওজ চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমাকে। প্রজ্ঞাপনে এ দুই কর্মকর্তাকে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্থানীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে দায়িত্বভার হস্তান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। নতুবা ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই বদলি আদেশ ঠেকাতে তৎপর হয়েছেন অভিযুক্ত প্রকৌশলী সুমন সিংহ। ধরনা দিচ্ছেন সরকারের উচ্চমহলে।
সওজ চট্টগ্রামের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, দক্ষিণ সড়ক বিভাগে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কম্পিউটার অপারেটর রয়েছে। তারপরও নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ তাকে ওএসডি করে সুব্রত সিংহকে সড়ক বিভাগের সকল টেন্ডার ও বিলিং কার্যক্রমের দায়িত্ব দিয়ে দেন।
শুধু বাড়িতে যেতে ৪০ লাখ ২০ হাজার টাকার রাস্তা তৈরি :
পটিয়া উপজেলার কচুয়াই গ্রামে বাড়ি সুমন সিংহের। শুধুমাত্র তাদের পারিবারিক ২০০ মিটার ও ১৫০ মিটারের দুটি রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে সরকারি ব্যয়ে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ৪০ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দে বানানো রাস্তা দুটির উপকারভোগীও এই দুই পরিবার। আবার আইন ভেঙে রাস্তা দুটির নামকরণ করা হয়েছে সেই প্রকৌশলীর মা-বাবা ও দাদা-দাদির নামে। ২০০ মিটার রাস্তাটি যোগেন্দ্র-মাধুরী সিংহের নামে, আর ১৫০ মিটারের রাস্তাটি তার মা-বাবা সুহাসিনী-প্রণবের নামে করা হয়েছে। যদিও এলজিইডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির নামে বর্তমানে সড়কের নামকরণ করা যায় না। আবার রাস্তা দুটির নামকরণ নিয়ে আপত্তি আছে এলাকার লোকজনের। তাদের দাবি, আগে এই রাস্তার নাম ছিল তালতলা টু অলির হাট সড়ক। প্রভাব খাটিয়ে রাস্তার নাম বদলে দিয়েছেন সুমন সিংহ। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ গড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত।
জানতে চাইলে সওজ চট্টগ্রাম দক্ষিণের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, সবকিছু নিয়ম মেনেই হয়েছে। বদলি ঠেকানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি অভিযুক্ত প্রকৌশলী সুমন সিংহ।
সওজ’র প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে চাননি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn