সোমবার - ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ২৭শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১১ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

অভিযোগের পাহাড় : কাউন্সিলর সাজ্জাদের বিরুদ্ধে

জনগণকে সুরক্ষা ও সেবা দেওয়ার বদলে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে অনেক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে। অনেকেই জড়িয়ে পড়ছেন বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। অনেকের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, মাদক কারবারি, নারী নির্যাতন, জমি দখল, প্রতারণা ও মারধরের অভিযোগে মামলা রয়েছে। সম্পত্তির লোভে সাধারণ মানুষ ও নিজের স্বজনদের পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে অনেক জনপ্রতিনিধির। আজ আমরা এমনই এক জনপ্রতিনিধি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেনর বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে।
বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হয়ে ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। এরপর আবারও বিএনপির সমর্থন নিয়েই ২০২০ সালে দ্বিতীয়বারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হন সাজ্জাদ। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় যখন বিএনপি নেতারা নিরব ছিলেন। তখন বিএনপির এই কাউন্সিলর বেশ দাপটের সাথেই এলাকায় সক্রিয় ছিলেন। অভিযোগ উঠেছিল ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সক্ষতা রয়েছে কাউন্সিলর সাজ্জাদের। এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বিএনপির সকল পদবি থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিরপুর ১২ নম্বরএলাকায় নিজের শশুর বাড়িতে বসবাস করেন কাউন্সিলর সাজ্জাদ। অভিযোগ রয়েছে শশুরবাড়ি পুরোটাই দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি।
সম্প্রতি কাউন্সিলর সাজ্জাদের মারধরের শিকার এক যুবক। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে জানা যায়, ওই যুবক কাউন্সিলর সাজ্জাদের ভায়রার ছেলে। ওই যুবকের অভিযোগ, ভায়রা ভাইয়ের মৃত্যুর পর সাজ্জাদের কুনজর পরে ওই পরিবারের উপর। মা ছেলে বোনদের মধ্যে সামান্য মনমালিন্য হলেই বিশেষ উদ্যেশ্য নিয়েই ভাইরা ভাইয়ের স্ত্রীর অভিভাবক সেজে ভায়রার ছেলে ও মেয়েদের নির্যাতন করা শুরু করেন।
এর আগেও আপন ভাতিজাকে জনসম্মুখে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিলেন কাউন্সিল সাজ্জাদ। কাউন্সিলর অফিসে বসেই সুখটানে মগ্ন সাজ্জাদ” শিরোনামে নিউজ ভাইরাল হয়। তবুও ক্ষমতার দাপট এতটুকু কমেনি। একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি করছেন এই কাউন্সিলর।
শুধু তাই নয় এলাকার সড়ক ও ফুটপাতে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করতে হলে চক্তির মাধ্যমে কাউন্সলর সাজ্জাদের অনুমতি লাগে। দোকান করতে মাসিক ও দৈনিক চুক্তিতে টাকা দিতে হয় তাকে। টাকা না দিলে সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেটের ডেকে উচ্ছেদ অভিযানের ভয় দেখান এই জনপ্রতিনিধি।
সর্বশেষ কাউন্সিলর সাজ্জাদের বিরুদ্ধে পরপর কয়েকটি জিডি হয়েছে। জিডি গুলোতে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে হুমকী, মিথ্যা মামলা দিয়ে এ্যাডভান্সের টাকা আত্নসাতের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, কাউন্সিলর থেকে সিটি ক্লাব মার্কেটে ২ লাখ টাকা এ্যাডভান্স দিয়ে দোকান ভাড়া নেয়। কিন্তু, পরবর্তীতে চুক্তির মেয়াদ থাকা অবস্থায় জোর করে দোকান থেকে বের করে দেয়। এরপর এ্যাডভান্সের টাকার জন্য ঘুরাতে থাকে। সর্বশেষ এ্যাডভান্সের টাকা না দিয়ে বিভিন্ন হুমকী-ধামকি দেয় বলে জিডিগুলোতে উল্লেখ রয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে কাউন্সিলর সাজ্জাদের মোবাইলে গত মঙ্গলবার সারাদিন কল দেওয়া হলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn